প্রচ্ছদ মুখ্যমন্ত্রীর দরবার 

High Madrasah Examination2022: ঝাল মুড়ি বিক্রেতার মেয়ে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় প্রথম, উচ্চশিক্ষার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সাহায্যের আবেদন কৃতির

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরী : মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশ ফেল গল্পের নায়ক নরেন আত্মহত্যা করেছিল পাশ করেও। অর্থাৎ পাস করার পর একটা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের কাছে উচ্চশিক্ষা বিলাসিতা মাত্র সমাজের করুন চিত্রটা তুলে ধরেছিলেন কথাশিল্পী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ খবর খবর হয়েছিল নরেন মারা গেছে পাস না করে কিন্তু আসল সত্যটা হল পাস করার পরেও নরেন্দ্রের মরতে হয়েছে। পাস করার চেয়ে আনন্দ তাদের মধ্যে বিরাজ করেছে তার চেয়েও বেশি নিরানন্দ বিরাজ করেছে।

একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে 2022 সালে হাই মাদ্রাসা পরীক্ষার প্রথম শরিফা খাতুন এর ক্ষেত্রে। 786 নম্বর পেয়ে পশ্চিমবাংলার মধ্যে সে প্রথম স্থান দখল করেছে। হাই মাদ্রাসা এবছর 73 হাজারের বেশি ছলেমেয়ে পরীক্ষায় বসেছিল তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে পাশ করেছে শরিফা খাতুন। প্রথম হওয়ার আনন্দ অবশ্যই শরীফের পরিবারে বইছে। কিন্তু একই সঙ্গে একরাশ হতাশা গ্রাস করে তুলেছে পরিবারকে।

Advertisement

মেয়ের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত সরিফার বাবা, মা। কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরনো সংসারে তাঁরা বুঝতে পারছেন না, এ বার কী করে পড়াশোনা চলবে। নিত্য অভাব যাতে ভবিষ্যতে তাঁর পড়াশোনায় বাধা হয়ে না-দাঁড়ায়, তার জন্য রেজাল্ট হাতে পেয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদনও করলেন শরিফা।

মালদহের রতুয়া থানার বটতলা আদর্শ হাই মাদ্রাসার কৃতি ছাত্রী শরিফা । প্রথম হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমকে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শরিফা বলেছেন, ‘‘আমি জানতাম, এক থেকে দশের মধ্যে থাকব। শিক্ষকেরাও বলতেন, আমি ভাল ফল করব। কিন্তু প্রথম হব ভাবতে পারিনি। খবর পাওয়ার পর এখন দারুণ লাগছে।’’ শরিফের ডাক্তার হতে চান। চিকিৎসক হয়ে সমাজের নিম্নবিত্ত পরিবারের মানুষদের জন্য কাজ করতে চান। কিন্তু চাইলেই তো হবে না তাদের পরিবারের যে আর্থিক অবস্থা সেখান থেকে কিভাবে পড়াশোনা করবে সেই চিন্তাতেই এখন মগ্ন হয়ে রয়েছে শরীফার পরিবার।

পাড়ায় ঝালমুড়ি বিক্রি করেন সরিফার বাবা উজির। ঝালমুড়ি বিক্রি করে যা রোজগার, তাতে কোনও মতে চলে সরিফাদের সংসার। তবে যতই টানাটানি থাকুক, মেয়ের পড়াশোনায় কোনও খামতি রাখেননি উজির। বাবাই তাঁকে সর্বক্ষণ উৎসাহ দিয়ে গিয়েছে বলেই জানালেন সরিফা।

তাঁর কথায়, ‘‘আমার আব্বু অত শিক্ষিত নয়। বাড়ির পাশে একটা দোকান খুলে এখন ঝালমুড়ি বেচে। কিন্তু আমার পড়াশোনায় কোনও বাধা আসতে দেয়নি। সব সময় আমায় উৎসাহ দিয়েছে। লকডাউনের সময় সবাই বলত, পরীক্ষা হবে না। তখন আব্বুই সব সময় আমায় পড়তে বসতে বলত।’’

বাবার আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে সচেতন শরিফা তাই তিনি সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাহায্যের আবেদন করেছেন। সংবাদমাধ্যমের কাছে এই মেধাবী সন্তান বলেছেন,‘‘আমার উচ্চশিক্ষার খরচ দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই বাবার। মু‌খ্যমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, একটু সাহায্য পেলে খুবই সুবিধা হয়।’’


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ