‘ভারত মাতা কি জয়‘ শ্লোগানে উদ্বেলিত কলেজে ক্লাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে এ কথা বলায় প্রবীণ অধ্যাপককে দেশদ্রোহী বলে ক্ষমা চাইতে হবে দাবি করল এবিভিপি তারপর যা ঘটল লজ্জার ….
বাংলার জনরব ডেস্ক : ‘ভারত মাতা কি জয়’ স্লোগানে কলেজের ক্যাম্পাস যখন হিল্লোলিত তখন একজন অধ্যাপক মহাশয় ক্লাস নিতে অসুবিধা হচ্ছে এই চিৎকারের এই কথা বলার পরেই তাকে দেশদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত করলেন দেশের জাতীয়তাবাদী সংগঠন এবিভিপি-র সমর্থকরা । একই সঙ্গে তথাকথিত দেশ ভক্তরা দাবি তুললেন ওই অধ্যাপককে ক্ষমা চাইতে হবে। আর তার পর যা ঘটল তা সমগ্র ছাত্র সমাজের কাছে কাছে কলংকের বিষয় হয়ে দাঁড়াল । সমগ্র দেশজুড়ে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে যায় । রাতারাতি এবিভিপির দয়ায় মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌরের রাজীব গাঁধী পিজি কলেজের ছাত্র সংগঠনের কীর্তি সমগ্র দেশজুড়ে প্রচার পায় ।
আসলে, ওই শিক্ষক এবিভিপি-র দাবি মত ক্ষমা চাইতে রাজি হয়ে যায় । তিনি ছাত্রদের পায়ে পড়তে শুরু করলেন বেশ কয়েকটি বইয়ের লেখক বর্ষীয়ান অধ্যাপক দীনেশচন্দ্র গুপ্ত। ঘটনায় হতচকিত ছাত্ররা পালাতে শুরু করলেন। কিন্তু অধ্যাপক নাছোড়। দৌড়ে তাঁদের পিছু ধাওয়া করেই পায়ে ধরে ক্ষমা চাইবেন। বুধবারের এই ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই ভাইরাল। এবিভিপি-র সমালোচনায় সরব হন বিশিষ্টরা। ছাত্রদের আচরণের সমালোচনা করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ। ক্ষমা চেয়ে নিয়েছে এবিভিপি-র স্থানীয় নেতৃত্ব।
বিস্তারিত খবরে জানা গেছে , গত বুধবার ক্লাস নিচ্ছিলেন অধ্যাপক দীনেশবাবু। সেই সময় এবিভিপি সমর্থকরা একটি স্মারকলিপি জমা দিতে আসেন। ক্লাসের বাইরে স্লোগান তুলতে থাকেন, ‘ভারত মাতা কি জয়’। দীনেশবাবু ক্লাস থেকে বেরিয়ে তাঁদের স্লোগান বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। কয়েকজন ছাত্র অধ্যাপককে ‘দেশবিরোধী’ বলেন। তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন। তখনই ঘটে এই কাণ্ড।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গেছে ,অধ্যাপক মহাশয় নীচু হয়ে ছাত্রদের পায়ে হাত দিয়ে ক্ষমা চাইছেন । ছাত্ররাও যে যার মতো পালানোর চেষ্টা করছেন। অন্য অধ্যাপকরা দীনেশবাবুকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তিনি তাঁদের এড়িয়েই এবিভিপি সমর্থকদের পা ছোঁয়ার চেষ্টা করছেন।
ঘটনার পর থেকেই তিন দিনের ছুটিতে রয়েছেন ওই অধ্যাপক। তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় তিনি মর্মাহত।