কলকাতা 

Eid Politics : ঈদের সকালে মৃত-আনিস খানের বাড়িতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম, পাল্টা রিজের বাড়িতে মমতা, কমিটেড মুসলিম ভোট কি হারাচ্ছে তৃণমূল?

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : ঈদের দিন সকালেই আনিস খানের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম। তিনি গতকালই ঘোষণা করেছিলেন ছাত্রনেতা আনিস খানের হত্যা রহস্যের কিনারা যতদিন না হচ্ছে ততদিন তারা থেমে থাকবে না। আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। ঈদের দিনে খুশির বার্তা নিয়ে যখন সবাই নিজেদের আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে উৎসব পালন করছেন ঠিক তখনই নীরবে কলকাতা থেকে বহুদূরে আনিস খানের বাড়িতে পৌঁছে গেলেন মোহাম্মদ সেলিম।

শুধু মোহাম্মদ সেলিম একা নন তার সঙ্গে গিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য শতরূপ ঘোষ এবং হাওড়া জেলার সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএমের এই রাজনীতির কাছে খানিকটা হার মেনে নিতে হলো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তিনি ঈদের দিন সকালে পৌঁছে গেলেন রিজওয়ানুর রহমানের মায়ের ঘরে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় রেড রোডে ঈদের জামাত শেষ হওয়ার পর ওখান থেকে সরাসরি পৌঁছে যান রিজওয়ানুর রহমানের বাড়িতে। সেখান বেশ কিছুক্ষণ তিনি ছিলেন।

Advertisement

রিজওয়ানুর রহমান এর মা কিশোয়ার জাহানের সঙ্গে তিনি কথা বলেন এবং তার পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আজকের এই কাজকর্ম বেশ কয়েক মাস আগে যদি তিনি গুরুত্ব দিতেন তাহলে এই রাজ্যের সংখ্যালঘুরা তৃণমূলের কাছ থেকে সরে যেত না।

এটা অস্বীকার করার উপায় নেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কমিটেড ভোটব্যাংকে অনেকটাই আঘাত হেনেছে। এর জন্য সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই দায়ী। তৃতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর এই রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য তেমন কোনো পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করেননি’।

একইসঙ্গেআলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাঁর সরকারের নেতিবাচক মানসিকতাতার প্রভাব রাজ্যের সংখ্যালঘু সমাজের পড়েছে। অন্যদিকে আনিস খানের মৃত্যুর পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি মত ১৫ দিনের মধ্যে আনিস খানের অপরাধীরা ধরা পড়েনি। উপরন্ত সিট জানিয়ে দিয়েছে আনিস খান খুন হন নি। এর পরে রয়েছে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বাবুল সুপ্রিয় এর মত আরএসএস ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তিকে প্রার্থী করা যেটা এই রাজ্যের সংখ্যালঘু জনমানষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তিতে শেষ পেরেক পুঁতে দিয়েছে বলেই রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আমতার এই বাড়িতেই মারা যান আনিস। সেই সময় অভিযোগ উঠেছিল রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। আনিসের পরিবারের অভিযোগ ছিল, ওই দিন গভীর রাতে পুলিশ আনিসের বাড়িতে হানা দেওয়ার পরে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তাঁকে ছাদ থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছিল বলেও দাবি করেছিল সিপিএম, কংগ্রেস ও আইএসএফের মতো বিরোধী দলগুলি। এখন আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করছে সিট।

তা সত্ত্বেও, আনিসের পরিবার সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব। আনিসের মৃত্যুর পর থেকেই তাঁর পরিবারের পাশে রয়েছে সিপিএম। তাঁদের আরও দাবি, আনিস সিপিএমের ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য ছিলেন। তাঁর বাবা সেলিম খানও এক সময় সিপিএমের সদস্য ছিলেন। তাই এই ঘটনায় শেষ পর্যন্ত তাঁদের পাশেই থাকবে দল— এই বার্তা দিতেই ইদ উৎসবের দিনে আনিসের বাড়ি গিয়েছিলেন সেলিম-সহ নেতারা। সেলিম দাবি করেছেন, যত দিন না আনিস খানের খুনের বিচার পাচ্ছে তাঁর পরিবার, তত দিন সিপিএম নেতৃত্ব তাঁদের পাশে থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাবে। তবে ইদের এক দিন আগে আনিসের বাড়িতে এসেছিলেন আইএসএস নেতা তথা বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তিনিও আনিসের বাবার পাশে থাকার বার্তা দিয়ে গিয়েছেন।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ