জেলা 

নদিয়ার বিডিও পর এবার ডিআই-র হুমকির মুখে হাইস্কুলের শিক্ষক, চাবকে পিঠের চামড়া তুলে নেবার হুমকির অভিযোগ

শেয়ার করুন
  • 54
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিবেদক : নদিয়া জেলায় বিডিও-র হুমকির মুখে পড়েছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক । তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঢেউ উঠলেও শাসকদল ও সরকারি আধিকারিকরা যে প্রতিবাদী শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আশালীন আচরণ করেই চলেছে ।

এবার দক্ষিণ ২৪ পরগণার স্কুল শিক্ষা দপ্তরের জেলা পরিদর্শক নজরুল ইসলাম সিপাইয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের প্রতি আশালীন ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে । রাজ্যের বহুল প্রচারিত একটি নিউজ পোর্টালে এই খবর গুরুত্ব সহকারে প্রকাশ করা হয়েছে ।

Advertisement

ওই নিউজ পোর্টালের খবর অনুসারে গত সোমবার ১০ সেপ্টেম্বর দক্ষিন ২৪ পরগনার জেলা পরিদর্শক নজরুল ইসলাম সিপাই হঠাৎ-ই নামখানার দুর্গাপুরের চঞ্চলাময়ী আদর্শ বিদ্যাপীঠে যান। এই খানেই সপ্তাহ-দুয়েক  আগেই এই স্কুলের ছয় শিক্ষক এবং অশিক্ষক কর্মীদের বহিরাগতরা এসে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠেছিল। অভিযোগ বহিরাগতদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় এক নেতা। আর এর জন্য প্রহৃত শিক্ষকরা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আশিস ভট্টাচার্যের দিকে আঙুল তুলেছিলেন।

তাঁদের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মদতেই এই হামলা। এই মারধরের ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায়তে ভাইরালও হয়ে যায়। প্রহৃত শিক্ষকদের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদ করাতেই তাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন। এই ঘটনার পর আক্রান্ত শিক্ষকরা ডিআই-এর কাছে নালিশ জানান। পুলিশে এফআইআরও করেন। বিষয়টি যাতে রাজ্য সরকারের কানে তোলা হয় তার জন্য বিধানসভায় বাম পরিষদীয় দলের নেতা সুজন চক্রবর্তী এবং বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের কাছেও অভিযোগ জানান।
দিন কয়েক আগে শিক্ষক ঐক্য মুক্ত মঞ্চের পক্ষ থেকে স্কুলের কাছে প্রতিবাদ সভাও করা হয়। এই সভা থেকে হামলার ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারির দাবিও তোলা হয়। সিপিএম-এর ছাত্র সংগঠন এসএফআই-ও স্কুলে পোস্টার সাঁটায়। পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করতে সোমবার আচমকাই  স্কুলে এসে হাজির হন ডিআই নজরুল হক সিপাই এবং তাঁর দল। সমস্ত শিক্ষকদের নিয়ে বৈঠক শুরু হতেই নজরুল হক ‘পিঠের চামড়া তুলে’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ।  শুধু এখানেই শেষ নয়, বৈঠক শুরু হতেই সিপিএম-এর নাম করে তুমুল গালাগালি দিতে থাকেন বলেও অভিযোগ। আক্রান্ত শিক্ষকরা কেন সুজন চক্রবর্তী ও আব্দুল মান্নানের দ্বারস্থ হয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রবল ধমকানি দিতে শুরু করেন বলেও অভিযোগ।

নামখানার চঞ্চলাময়ী আদর্শ বিদ্যাপীঠের অচলাবস্থা নিয়ে বহুদিন ধরেই নানা ঘটনা ঘটে আসছে। ২৩ আগষ্ট স্কুলের ভিতরে তৃণমূল নেতার নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে  ছিল  বলে অভিযোগ। বৈঠকে হাজির সকলেই আশা করেছিলেন যে স্কুলের পঠন-পাঠনকে স্বাভাবিক করা থেকে শুরু করে অপ্রতুল শিক্ষকের সংখ্যাকে বাড়ানোর বিষয়-সহ আক্রান্ত শিক্ষকদের মারধরের ঘটনা নিয়ে হয়তো ডিআই আলোচনা করবেন। কিন্তু, দক্ষিণ ২৪ পরগণার স্কুল জেলা পরিদর্শক যেভাবে বৈঠকের শুরুতেই রণংদেহী মূর্তি ধরে রাজনৈতিক বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তাতে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে।  অভিযোগ, মাত্র ২ জনের বক্তব্য শোনা ছাড়া আর কারোর কথাতেই কান দেননি তিনি।

চঞ্চলাময়ী আদর্শ বিদ্যাপীঠের শিক্ষকদের পিএফ থেকে সার্ভিস বুক নিয়ে বহুদিন ধরে অচলাবস্থা- তা নিয়ে ডিআই কোনও কথাই শোনেনি বলে অভিযোগ। ২৮ সেপ্টেম্বর ফের বৈঠক করবেন বলে বেরিয়ে যান। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ডিআই স্বীকার করেন,বৈঠকে সুজন চক্রবর্তী, আব্দুল মান্নান, আক্রান্ত আমরা, মইদুল ইসলাম, অম্বিকেশ মহাপাত্রদের নাম  তিনি নিয়েছেন । তবে, তাঁর বক্তব্য রাজনৈতিক, তা মানতে চাননি তিনি। তাঁর যুক্তি একটা স্কুলের ঘটনার সঙ্গে এরা কেন জড়াবে সেই প্রশ্নই তিনি রেখেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, নামখানা এলাকায় প্রতিবাদী শিক্ষক নেতা মইদুল ইসলাম স্কুলে না গিয়ে লোক খেপিয়ে বেড়াচ্ছেন। মইদুল এলাকায় সিপিএম, আক্রান্ত আমরা-কে দিয়ে চঞ্চলাময়ী আদর্শ বিদ্যাপীঠের ঘটনায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি। স্কুলে কেন টয়লেট থাকবে না তা নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে কড়া ধমকও দিয়েছেন বলে ডিআই নজরুল হক-এর দাবি। ( তথ্য সূত্র : ওয়ান ইন্ডিয়া বাংলা)

 

 


শেয়ার করুন
  • 54
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

13 − nine =