মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে কুড়ি চাকার গাড়ি বন্ধ,ফলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দাড়িয়ে থাকা ট্রাকে পচছে অত্যাবশকীয় পণ্য, দাম বাড়ার আশংকা, পুলিশি জুলুমের অভিযোগ ট্রাক মালিক সংগঠনের
বিশেষ প্রতিবেদক : মাঝেরহাটের সেতু ভাঙার পর, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে হঠাৎই ২০ চাকার গাড়িগুলির উপর নিষেধাঞ্জা জারি করার ফলে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে ট্রাক। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কগুলিতে সার সার দাঁড়িয়ে রয়েছে গাড়ি। তাতে পচছে ফল, সবজি, মাছসহ অত্যাবশকীয় পণ্য অভিযোগ করেছে ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে অদূর ভবিষ্যতে জিনিসপত্রের দাম বাড়বে বলে মনে করছেন অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা। সংগঠনের যুগ্ম সম্পাদক প্রবীর চ্যাটার্জির অভিযোগ, “এই ঘটনার পর পুলিশি জুলুমও বেড়ে গেছে অনেকটাই। দাঁড়িয়ে থাকা লরিগুলি থেকে তোলা তুলছে পুলিশের একাংশ।”
ট্রাক মালিকদের দাবি, ১৮-২২ চাকার ট্রাকের জন্য আলাদা করিডর করুক রাজ্য সরকার। ইতিমধ্যেই তারা সরকারকে এই প্রস্তাব পাঠিয়েছেন ট্রাক মালিকরা।উল্লেখ্য,মাঝেরহাট ব্রিজে দুর্ঘটনার পর নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, “২০ চাকার লরিগুলো হোমেও লাগে না, যজ্ঞেও লাগে না। ওগুলো আর চালানো যাবে না।” তারপর রাজ্য পরিবহন দপ্তরের পক্ষ থেকে জারি করা হয় নির্দেশিকা। কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বিনীত গোয়েল বলেন, “শহরে কুড়ি চাকার গাড়ি আর ঢুকতে দেওয়া হবে না।”
ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিন্দর সিং গিল এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, “ আমি বহুদিন হল এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আমি কুড়ি চাকার কোনও গাড়ি দেখিনি। ওগুলো হয় ১৮ চাকার কিংবা ২২ চাকার।”
সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে অ্যাসোসিয়েশন দাবি করেছে, ১৮ বা ২২ চাকার গাড়িগুলির জন্য ব্রিজের তেমন কোনও ক্ষতি হয় না। ক্ষতি হয় ওভারলোডিংয়ের জন্য। অবিলম্বে ওভারলোডিং বন্ধ করার দাবি জানান ট্রাক মালিকরা।
কিন্তু ট্রাক মালিকদের একাংশই তো ওভারলোডিংয়ের জন্য দায়ি? এই প্রশ্নের উত্তরে অ্যাসোসিয়েশন বলে, “পুলিশের মদত নিয়ে অল্পকিছু ট্রাক মালিক ওভারলোডিং করে।” ট্রাক মালিকদের সংগঠন জানিয়েছে, এরাজ্যে মূলত ওভারলোডিং হয় বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়ার কয়েকটি অংশে। মূলত পাথর আর বালির গাড়িতেই ওভারলোডিং হয়। সংগঠনের কর্তাদের দাবি, ওই জেলাগুলির যেখানে ওভারলোডিং হচ্ছে তার মূলে কুঠারাঘাত করলে বন্ধ হতে পারে এই সমস্যা। একইসঙ্গে পুলিশি হেনস্থার অভিযোগ এনেছে এই অ্যাসোসিয়েশন।
তাদের বক্তব্য, “এরাজ্যে ট্রাক ঢুকলে অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। সর্বভারতীয়স্তরে সবাই জানে সে কথা। অন্য কোনও রাজ্যে এতটা জুলুম নেই। হাইওয়ের উপর দাঁড়িয়ে থাকে পুলিশ। দু’শো, পাঁচশো, হাজার করে দিতে হয় তাদের। এই সমস্যার সমাধান অবিলম্বে করা উচিত রাজ্য সরকারের।”