Featured Video Play Iconঅন্যান্য কলকাতা 

Independent Indian Politics : প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা ছিলেন প্রগতিশীল, মোদী হলেন প্রতিক্রিয়াশীল-মৌলবাদী প্রধানমন্ত্রী! রাজনীতিবিদদের বাস্তববাদী হতে হয় একান্ত সাক্ষাৎকারে বললেন প্রবীণ আইনজীবী ও প্রাক্তন সাংসদ সরদার আমজাদ আলী

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : বাংলার জনরব -এর মুখোমুখি হয়ে নিজের রাজনৈতিক জীবন ও স্বাধীনোত্তর ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের ভাঙাগড়ার গল্প বললেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও প্রাক্তন সাংসদ বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ সরদার আমজাদ আলী । গতকাল সোমবার মহাষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বাংলার জনরব ইউটিউব চ্যানেলের লাইভ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সরদার আমজাদ আলী বললেন কীভাবে রাজনীতিতে এলেন । কংগ্রেসী পরিবারের সন্তান হয়েও বাংলা কংগ্রেসের হাত ধরেই সংসদীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করেছিলেন তিনি । তারপর বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ হুমায়ুন কবীরের মৃত্যুর পর তাঁর আসন বসিরহাট থেকে কয়েক মাসের জন্য লোকসভায় প্রবেশ । তারপর ১৯৭২ সালে ফের ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে রাজ্যসভায় গেলেন । ৬ বছর ধরে রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে তিনি যেসব গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন তা এক কথায় ইতিহাস বলা যেতে পারে ।

রাষ্ট্রসংঘে ভাষণ দেওয়ার জন্য তাঁর তৈরি করা বক্তব্যের প্রতিলিপি বদল করার অনুরোধ করা সত্ত্বে তিনি তাতে রাজী হননি । শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আমজাদ সাহেব নিজের লেখা থেকে ভাষণ দিয়েছিলেন, রাষ্ট্রসংঘে । রাজনীতি করতে গিয়ে কোথাও আদর্শের সঙ্গে তিনি সমঝোতা করেননি। প্রতিনিয়ত নিজে যেটা  বুঝেছেন সেটাই করেছেন । প্রাজ্ঞ এই রাজনীতিবিদ তাঁর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সমগ্র দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের ভাঙাগড়ার কাহিনী তুলে ধরেছেন । দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে ইন্দিরা গান্ধীর কংগ্রেস ভাঙার নেপথ্য কাহিনী দ্ব্যর্থহীন ভাষায় গল্পের আকারে সাধারণ মানুষের কাছে তিনি তুলে ধরেছেন । এক জ্বলন্ত ইতিহাসকে তিনি নিজের মুন্সীয়ানার গুণে সহজবোধ্য করে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন আমজাদ সাহেব । দেশের সাধারণ মানুষের স্বার্থে  রাজন্যভাতা বিলোপ, ব্যাঙ্ক জাতীয়করণের মতো জনমুখী সিদ্ধান্ত নিতেই ইন্দিরা সেদিন কংগ্রেসকে ভেঙে নতুন কংগ্রেস গড়েছিলেন ।

Advertisement

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার চোখে দেখা সেরা প্রধানমন্ত্রী হলেন ইন্দিরা গান্ধী । যিনি মানুষের স্বার্থে প্রগতিশীল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । দলীয় স্বার্থ নয় , দলের নেতাদের স্বার্থের চেয়ে অনেক বেশি তিনি নজর দিয়েছিলেন দেশের গরীব-পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বার্থকে চরিতার্থ করতে । সেজন্য তিনি সফল হয়েছিলেন। দেশের মানুষ তাঁকে এখনও সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠা করে রেখেছে। কারণ ইন্দিরা গান্ধী ছিলেন প্রগতিশীল দেশনেত্রী । আর বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অনেকে এঁকে ইন্দিরার সঙ্গে তুলনা করছেন । তবে মোদী ইন্দিরার সমকক্ষ নন, এটা যেমন সত্য। মোদী হলেন মৌলবাদী আদর্শের প্রধানমন্ত্রী। আরএসএস মতাদর্শে বিশ্বাসী একটি আদর্শকে ভারতে বাস্তবায়ন করতে চান মোদীজি। সেই আদর্শ ভারতের সংস্কৃতি পক্ষে সুখকর নয়। এক কথায় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা ছিলেন প্রগতিশীল, মোদী হলেন প্রতিক্রিয়াশীল-মৌলবাদী প্রধানমন্ত্রী!

প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন, প্রতিটি রাজনীতিবিদকে বাস্তবতা উপলদ্ধি করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আমার ক্ষেত্রে তা ঘটেছে । কংগ্রেস না বাঁচলে দেশ বাঁচবে না, কানাহাইয়া কুমারের এই মন্তব্য ঘিরে প্রশ্ন করা হলে। আমজাদ সাহেব বলেন, কানাহাইয়া কুমারের বক্তব্যকে মেনে নিয়েই বলছি, কংগ্রেসকে বাঁচাবে কে ? কংগ্রেস দলকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে , কেন কংগ্রেস ভাঙছে ? প্রায় এক ঘন্টা ১৫ মিনিট ধরে চলা এই লাইভ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর মসৃণভাবে দিয়েছেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ তথা প্রবীণ আইনজীবী সরদার আমজাদ আলী । কোন পরিস্থিতির মধ্যে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তা নিয়ে তিনি বিস্তারিত বলেছেন এই সাক্ষাৎকারে। অনুষ্ঠানের শেষে তিনি আবেগ মোথিত কণ্ঠে বলেন, আমার রাজনীতি জীবনে যেটুকু সম্মান ও কাজ করার সুযোগ হয়েছে তার নেপথ্যে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদানকে অস্বীকার করতে পারব না । এই জন্যই জীবনের এই পড়ন্ত বেলায় দেশের সর্বকালের সেরা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কাছে আমি বিশেষভাবে ঋণী। তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

এই খবরে সঙ্গে ইউটিউবের লিংকটা জুড়ে দেওয়া হলো আগ্রহীরা পুরো সাক্ষাৎকারটি দেখে নিতে পারেন। এটা কোনো একজন রাজনীতিবিদের গল্প নয়, এটা স্বাধীনোত্তর ভারতের ৫০ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস । এই ইতিহাসের অন্যতম প্রধান প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ যা দেশকালের ইতিহাসের দলিল হিসাবে বিবেচিত হবে । এই অনুষ্ঠান ভাল লাগলে লাইক করবেন , সাবসক্রাইব করবেন এবং শেয়ার করে ইতিহাসকে অন্যদের কাছে পৌছে দেবেন।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ