অন্যান্য কলকাতা 

Madrasah Service Commission : মাননীয় শিক্ষক – শিক্ষিকাগণের বদলির বিষয়টি চালু করার জন্য প্রথম পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা কৃত্যক আয়োগ আইন সংশোধন হয়েছিল। কেন ও কি কারণে? : ড. আবদুস সাত্তার

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

ড. আবদুস সাত্তার : ইতিহাসবিদ মেইটল্যান্ড তাঁর ছাত্রদের বার বার বলতেন, ‘ এখন যা অতীত তা এক সময় ছিল ভবিষ্যতে’ ।তাই অতীতকে না জানলে বর্তমানকে জানা একটু কঠিন হয়। পশ্চিমবঙ্গ বিদ্যালয় কৃত্যক আয়োগ আইন গঠনের পূর্বে মাননীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগ করত পরিচালন সমিতি, জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অনুমতি সাপেক্ষে। ফলত, অন্তত তিনটি ক্ষেত্রে ভারসাম্য রক্ষিত হতো। এক. ধর্ম – বর্ণ নির্বিশেষে এলাকার জনবিন্যাস অনুযায়ী মুলত সেই অঞ্চলের শিক্ষিত ছেলে – মেয়েরাই শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পেত। দুই. বিদ্যালয়ের প্রতি এক ধরনের দায়িত্ত্ববোধ, ভালোবাসাও গড়ে উঠত। তিন. গ্রাম ও শহরের মধ্যে ভারসাম্যও বজায় থাকতো। বিদ্যালয় সার্ভিস কমিশন গঠন হওয়ার পরে তা আর রইল না। বৈষম্যের ধারণারও সূচনা হলো। সমাজে আর এক ধরনের ক্ষত জন্ম নিল। যে কারণে দেখবেন, সংখ্যালঘু মুসলিমদের বৃহত্তর অংশ তাই সরকারি চাকুরীতে নয়, শিক্ষকতার পেশাতেই ছিলেন। সেই সময় সংরক্ষনের কড়াকড়িও ছিল না।

আমাদের দেশে একটা অংশের মানুষ আছেন যারা ভালো ব্যবস্থাকেও কালিমালিপ্ত করতে রাজনীতির কর্দমাক্ত পিচ্ছিল পথে খুব সহজেই উঠে পড়ে লেগে যান। শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অর্থের যথেচ্ছ ব্যবহার শুরু হতে থাকলো। এর প্রভাব সরাসরি এসে পড়লো গরিব, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির উপর। কোথায় পাবে বিপুল পরিমাণ অর্থ?তাই একপ্রকার বাধ্য হয়ে সার্ভিস কমিশন করা হলো। আবার, এই কমিশন গঠনের প্রথম দিকে শিক্ষক- শিক্ষিকা নিয়োগের ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হতে থাকলো সংখ্যালঘু মুসলিম পরিবারের ছেলে-মেয়েরা। বলা হলো, প্রতিযোগিতার বাজারে তারা এঁটে উঠতে পারছে না। প্রশ্ন হলো, পারবেই বা কি করে? এই অংশের জন্য তো কোনো সংরক্ষণ সেই সময় ছিল না। কি করলে তারা প্রতিযোগিতার বাজারে সক্ষম হয়ে উঠবে তার কোনও দিশা সরকারও দেখাতে পারলো না। দেরিতে, বহু দেরিতে হলেও ওবিসি সংরক্ষণ একটা সাময়িক সুরক্ষা হিসেবে হাজির হয়েছিল।

Advertisement

উপরিউক্ত প্রেক্ষিতে এটা পরিষ্কার যে, প্রথম কমিটি, পরিচালন সমিতি এবং পরে জেলা এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ থেকে সুপারিশকৃত নাম থেকে নিয়োগ করা হতো, তাই বদলির প্রশ্নও ছিলো না।

( লেখক রাজ্যের প্রাক্তন সংখ্যালঘু উন্নয়ন ও মাদ্রাসা শিক্ষা দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী। তিনি মন্ত্রী থাকাকালীন সময়ে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন গঠিত হয়েছিল। লেখক এর মতামত সম্পূর্ণ নিজস্ব।)


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ