দেশ 

Hathras Case UP : যোগীর ‘রামরাজ্য ‘র প্রশংসা মোদীজি করলেও হাথরসের নির্যাতিতা দলিত পরিবার ইনসাফ পাওয়া তো দূরের কথা, এখন সামাজিক বয়কটের শিকার , এর নামই ‘আচ্ছে দিন’?

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক :  গতকাল মঙ্গলবার ১৪ সেপ্টেম্বর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় ভাষণ দিতে গিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন,  যোগী সরকারের শাসন দেশের মধ্যে সেরা । তাঁর দলিত থেকে শুরু পিছিয়ে পড় জাতি গোষ্ঠীর উন্নয়ন হয়েছে চোখে পড়ার মতো । তিনি যখন আলিগড় থেকে যোগী সরকারের প্রশংসা করছেন ঠিক সেই সময় হাথরসের নির্যাতিতার পরিবারের গুমড়ে কাঁদছেন । এক বছর পরেও বিচার পায়নি হাথরস । কাঁদছে হাথরসের প্রতিটি মাটি । যেখানে এক দলিত পরিবারের কন্যা গণধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল । পুলিশি পাহারায় সেই মেয়েটির লাশ পুড়িয়ে দিয়েছিল যোগী প্রশাসন । আদালত কড়া অবস্থান নেওয়া সত্ত্বে আজও বিচার পায়নি হাথরসের দলিত পরিবার । কেন পায়নি ?

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কী একবারও মনে হয়েছিল হাথরসের ওই দলিত পরিবারের মেয়েটির কথা । খেতের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় তরুণীকে ফেলে রেখে যায় অভিযুক্তরা। পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় তরুণীকে উদ্ধার করে আলিগড়ের হাসপাতালে ভর্তি করে। তরুণীর গলায় ও গোপনাঙ্গে মারাত্মক আঘাত ছিল। তারপর সেখান থেকে দিল্লির সফদর জং হাসপাতালে। কিন্তু ১১ দিনের যমে-মানুষে টানাটানির পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন নির্যাতিতা।

Advertisement

এরপর শুরু হয় দেহ নিয়ে টানাটানি। অভিযোগ, উত্তরপ্রদেশ পুলিশ এবং আধিকারিকরা জোর করে দেহ অ্যাম্বুল্যান্সে করে নিয়ে এসে ভোর রাত সাড়ে তিনটের সময় খেতের মধ্যে চিতা সাজিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। যাকে ঘিরে শুরু হয় চাপানউতোর। সেই ঘটনার বছর ঘুরেছে। গ্রামে এখনও একঘরে সেই পরিবার। সারাক্ষণ সিসিটিভির নজরবন্দি তাঁরা। বাড়ি পাহারায় ৩৫ জন সিআরপিএফ জওয়ান। এক বছরে দমবন্ধ হয়ে এসেছে তাঁদের।

নির্যাতিতার বড় ভাই জানিয়েছেন, “এখন এখানে দমবন্ধ হয়ে আসে। কেউ কথা বলে না আমাদের সঙ্গে। আমাদের অপরাধীর চোখে দেখে সবাই। আমরা জানি, সিআরপিএফ পাহারা উঠলেই আমাদের উপর হামলা হবে। আমার তিনটি বাচ্চা মেয়ে রয়েছে। ওদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছি।” এই ঘটনার পর পরই তিনি চাকরি হারান। এখন বাড়িতেই কাটে সময়।

নির্যাতিতার বাবা বলেছেন, “আমরা চাই, সবাই আমাদের গ্রহণ করুক। আমরা কী দোষ করেছি! আমরা মন্দির, বাজারে যেতে পারি না। সারাক্ষণ বাড়িতে থেকে প্রার্থনা করি, যাতে আদালতের রায় তাড়াতাড়ি বেরোয়।” পরিবারের দাবি, মেয়ের মৃত্যুর বিচার তো পানইনি, উল্টে গ্রামেও সামাজিক বয়কটের শিকার তাঁরা।

নির্যাতিতার আরেক ভাই বলেছেন, “আমি দেখেছি, অভিযুক্ত সন্দীপ, রবি, লব কুষ এবং রামুদের পরিবার গাড়িতে করে ঘোরে, অন্য গ্রামবাসীরা রিকশা আর জিপে ওদের সঙ্গে যায় জেলে দেখা করতে। গ্রামের অর্ধেক মানুষ ওদের পক্ষে, আমাদের পাশে কেউ নেই।” এই ঘটনার পর সরকার থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য পেয়েছিল দলিত পরিবার। কিন্তু এখনও প্রতিশ্রুতি মতো চাকরি এবং নতুন বাড়ি তাঁরা পাননি।

ভাই বলেছেন, “মামলা চালাতে গিয়ে সব গরু-মোষ আমরা বেচে দিয়েছি।  এমনকী আদালতে শুনানির দিনও গ্রামবাসীরা আমাদের হুমকি দেয়, আইনজীবীদের ভয় দেখায়। আমরা জানি, ওরা চায় আমাদের আইনজীবীরা মামলা ছেড়ে দিক। ঠাকুরদের বাঁচানোর জন্য ওরা সবকিছু করতে পারে।”


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ