দেশ 

U.P. Election 2022: উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নেতৃত্বে বিজেপির বিরুদ্ধে একলা লড়াই করার কংগ্রেসের সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কোন বিশেষ কারণ লুকিয়ে রয়েছে ? জানতে হলে ক্লিক করুন

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরী : উত্তরপ্রদেশের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে আগামী ২০২২ এর বিধানসভা নির্বাচনে একা লড়াই করবে কংগ্রেস দল বলে জানিয়ে দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বিশিষ্ট আইনজীবী সালমান খুরশিদ। তিনি বলেছেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস দলকে নেতৃত্ব দেবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। প্রিয়াঙ্কার নেতৃত্বে ওই রাজ্যের ৪০৩ টি আসনে প্রার্থী দেবে কংগ্রেস, কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সমঝোতায় যাবে না।

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন এর ফলে যোগী সরকারের জেতার পথ অনেকটাই সুগম হলো। উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার এই মুহূর্তে চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। কারণ সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনের তেমন ভালো ফল করতে পারেনি বিজেপি দল। যদিও পঞ্চায়েত সমিতি পঞ্চায়েত প্রধান এবং জেলা প্রধান নির্বাচনে বিজেপি একপ্রকার জনাদেশকে অগ্রাহ্য করে জোর করে এই সমস্ত জায়গায় নিজেদের লোকদের বসাতে সক্ষম হয়েছে।

Advertisement

উত্তর প্রদেশের পুলিশ সরাসরি এই কাজে বিরোধীদের বিপক্ষে কাজ করেছে যার ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সমাজবাদী পার্টি এবং কংগ্রেস দল ভালো ফল করা  সত্ত্বেও বোর্ড গঠনে তেমন প্রতিফলন ঘটাতে পারেনি। পুলিশ নিরপেক্ষ না থাকার কারণেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভালো ফল করে বিরোধীরা সেই ফল ধরে রাখতে পারেনি।

এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস দলের একা লড়াই করার সিদ্ধান্ত যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা সলমন খুরশিদ (Salman Khurshid) বলছেন,”কংগ্রেস অন্য কোনও দলের সঙ্গে জোট করবে না। আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লড়াই করব। দলের কর্মীরা প্রত্যেক কেন্দ্রে গিয়ে মানুষের সমস্যার কথা শুনবে।”

এর আগে অবশ্য প্রিয়াঙ্কা নিজেই ঘোষণা করেছিলেন, উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা (Uttar Pradesh) নির্বাচনে অন্য বিজেপি (BJP) বিরোধী দলের সঙ্গে জোট করতে আপত্তি নেই কংগ্রেসের। কংগ্রেস নেত্রীর বক্তব্য ছিল, ‘আমাদের লক্ষ্য বিজেপিকে হারানো। কিন্তু, আমরা নিজেদের দলের স্বার্থ আগে দেখব। যে দলের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা হবে, তাঁদেরও আমাদের মতো খোলা মনের হতে হবে।’ সূত্রের খবর, কংগ্রেস চাইছিল ২০১৭ সালের মতো অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়তে। কিন্তু অখিলেশ (Akhilesh Yadav) আগেই একতরফাভাবে ঘোষণা করে দিয়েছেন, তাঁর দল বড় কোনও দলের সঙ্গে জোট করবে না।

তবে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেসের একা লড়াই করার  সিদ্ধান্তের পেছনে বড় রাজনৈতিক অংক কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনৈতিক কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ একলা চলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। প্রথমত আঞ্চলিক দলগুলির তাদের রাজনৈতিক দিশা ঠিক করতে পারে না। বিশেষ করে উত্তরপ্রদেশের যে দুটি আঞ্চলিক দল রয়েছে সমাজবাদী পাটির্র ও বহুজন সমাজ পার্টি এরা রাজনৈতিক দিশা সঠিকভাবে নির্ধারণ করতে পারছে না। ফলে এদের সঙ্গে জোটে গেলে কংগ্রেসের সম্ভাবনা কমে যাবে। তাই  খানিকটা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কংগ্রেস একাই লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কংগ্রেস মনে করছে উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ ভোট কংগ্রেসের দখলে যাবে কারণ যোগী আদিত্যনাথ যেভাবে ঠাকুর সম্প্রদায়কে গুরুত্ব দিয়েছে সেটা উত্তরপ্রদেশের ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় মেনে নিতে পারছে না সেজন্যই ব্রাহ্মণরা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সে ক্ষেত্রে কংগ্রেস দল ওই ব্রাহ্মণ ভোটে ভাগ বসাতে চাইছে। একইসঙ্গে করণা পরিস্থিতিতে যোগী সরকারের ব্যর্থতা এবং যেভাবে মানুষের মৃত্যু মিছিল উত্তরপ্রদেশে দেখা গেছে তা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সেই ক্ষোভের ডিভিডেন্ট কংগ্রেস পাবে বলে মনে করছে। তাই উত্তরপ্রদেশে একা লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস দল।

অন্যদিকে কৃষক আন্দোলনের ফলে কৃষকদের একটা বড় অংশের ভোট কংগ্রেস পেতে পারে বলে মনে করছে নেতৃত্ব। কারণ কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে একমাত্র রাহুল গান্ধী এই সময়ে সবচেয়ে বেশি কথা বলেছেন।

সবদিক বিচার বিবেচনার পর মনে করা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের একলা চলার নেপথ্য কারণ অনেক রয়েছে। তারা মনে করছে একা লড়াই করে৪০৩ টি আসনে প্রার্থী দিলে আগের তুলনায় ভালো ফল তারা  করতে পারব। সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কংগ্রেস যেভাবে হঠাৎ করেই ভালো ফল করেছে তাতে আশার আলো দেখছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাই উত্তর প্রদেশ কংগ্রেস একলা চলার সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে বড় রাজনৈতিক কৌশল কাজ করছে বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ