কলকাতা 

“ভারতের মুসলমানরা ভারতের জন্য এবং ভারতের একতার জন্য লড়াই করেছেন কিছু সাম্প্রদায়িক নেতার জন্য দেশভাগ হয়েছে। ভারত সবসময় ভারতীয়দের জন্য“ : চন্দ্রকুমার বসু

শেয়ার করুন
  • 12
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিবেদক : একেই বলে পারিবারিক ঐতিহ্য । পারিবারিক কারণে একজন মানুষের যেকোন সময় মানসিকতার পরিবর্তন হতে পারে। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। আর সেই নিয়মের সাধারনত কোন ব্যতিক্রম দেখা যায় না । নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু দেশের হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতির প্রতীক হিসাবে বিরাজ করছেন। তিনিই দেশের একমাত্র জননায়ক যিনি দুই সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিলেন।

এই পরিবারের এক সন্তান যখন আরএসএস পরিচালিত রাজনৈতিক দলে যোগ দেন তখন প্রশ্ন ওঠে নেতাজির আদর্শের পরিপন্থী দলে কেন নেতাজির আত্মীয় । সেই প্রশ্ন আম বাঙালির ছিল । স্বাভাবিকভাবে নেতাজি পরিবারের একজনকে পেয়ে বিজেপি খুশি-উল্লসিত । তাঁকে রাজ্য বিজেপি-র সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হয়। কিন্ত ওই পারিবারিক একটা ঐতিহ্য জ্বীনের মধ্যে কাজ করে তা সময় হলে বেরিয়ে আসে। নেতাজি পরিবারের সন্তান চন্দ্রকুমার বসু বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি । ইদানিং তাঁর কথাবার্তায় দলকে চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছে । প্রকাশ্যে না হলেও সোস্যাল মিডিয়ায় নানা বিষয় নিয়ে চন্দ্রকুমার বসুর মন্তব্যে বিজেপি দল বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে ।

Advertisement

সম্প্রতি গো-রক্ষকদের আক্রমণে বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির প্রেক্ষিতে তিনি মন্তব্য করেছিলেন গোরু যেমন দুধ দেয়, একইভাবে ছাগল দুধ দেয়, গান্ধীজি ছাগলের দুধ খেতেন । সুতরাং ছাগলও আমাদের মাতা, তাই ছাগল হত্যা বন্ধ করতে হবে। এনিয়ে হইচই পড়ে যায় । এমনকি তথাগত রায়ও চন্দ্র বসু কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন।

কয়েকদিন আগে বিজেপি-র রাজ্যসভার সাংসদ রুপা গাঙ্গুলি সংবাদ মাধ্যমকে অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি নিয়ে মুসলমানদের কটাক্ষ করে  বলেন , “দেশভাগের সময় ঠিক হয়েছিল পাকিস্তান মুসলিম রাষ্ট্র হবে। বাংলাদেশও মূলত মুসলমানদের জন্যই স্থির হয়। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুরা ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গে জায়গা পাবে।” বিজেপি-র রূপা গাঙ্গুলির এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে সোস্যাল মিডিয়ায় রাজ্য সহ-সভাপতি চন্দ্রকুমার বসু কিছু কথা লেখেন।

তিনি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে লেখেন,“মাননীয়া সাংসদকে সম্মান জানিয়েই বলছি ভারতের মুসলমানরা ভারতের জন্য এবং ভারতের একতার জন্য লড়াই করেছেন। আজাদ হিন্দ ফৌজেও মুসলিমরা দেশের জন্য লড়াই করেছেন। কিছু সাম্প্রদায়িক নেতার জন্য দেশভাগ হয়েছে। ভারত সবসময় ভারতীয়দের জন্য।” সেখানেই রাজকুমার দাশগুপ্ত নামে এক ব্যক্তি তাঁকে ফেসবুকে মুহাম্মদ আলি জিন্নাহকে নিয়ে প্রশ্ন করেন । এই প্রশ্নে উত্তর দিতে গিয়ে চন্দ্রকুমার বসু ফেসবুকে লেখেন,“জিন্নাহ হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের একজন মসিহা ছিলেন ১৯৪০ অবধি। যখন তিনি বুঝতে পারেন স্বাধীন ভারতে মুসলিম লিগ ক্ষমতার ভাগ পাবেন না, তখন তিনি লাহোর কংগ্রেসে পাকিস্তান প্রস্তাব তোলেন। ওই সময় কংগ্রেস মুসলিমদের কোণঠাসা করে দিয়েছিল।”  তিনি খোদ জাতীয় কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষতার দাবিকে নস্যাৎ করে লেখেন,“ওই সময় কংগ্রেস আসলে একটি হিন্দু পার্টি ছিল। সর্ববর্ণের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করত না কংগ্রেস।”

চান্দ্রকুমার বসুর এই মন্তব্যে বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে বিজেপি দল । বিশেষ করে তিনি যেভাবে সংখ্যালঘুদের হয়ে কথা বলছেন তাতে বিজেপি দলকে বেশকিছুটা ব্যাকফুটে ফেলে দিয়েছে বললে অত্যুক্তি হয় না।

 

 

 


শেয়ার করুন
  • 12
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

two × four =