কলকাতা 

পরীক্ষা ছাড়া উচ্চমাধ্যমিক ফল : পাশের হার ৯৭.৬৯, প্রথম দশে ৮৬ জন, এককভাবে প্রথম রুমানা সুলতানা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরী : এবারের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এককভাবে প্রথম হলেন মুর্শিদাবাদের রুমানা সুলতানা। সংখ্যালঘু পরিবারের এই মেয়েটি পরীক্ষায় প্রথম হয়েও মনের মধ্যে আক্ষেপ জমা হয়ে রয়েছে। তিনি দুঃখ করে বলেছেন পরীক্ষা না দিতে পারার যে কষ্ট সেটা পদে-পদে আমি অনুভব করছি। মুর্শিদাবাদের কান্দি মনীন্দ্র চন্দ্র হাইস্কুলের মনীন্দ্র চন্দ্র গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী রুমানা সুলতানা বরাবরই মেধাবী। ২০১৯ এর মাধ্যমিক পরীক্ষায় পঞ্চম স্থান দখল করেছিল এবার সেই পঞ্চম থেকে প্রথম স্থানে উঠে এল রুমানা সুলতানা। সংখ্যালঘু পরিবারের সন্তান হিসাবে তিনি সম্ভবত একমাত্র মুসলিম মেয়ে যিনি উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম হওয়ার কৃতিত্ব অর্জন করলেন।

তার এই সাফল্যে সমগ্র মুর্শিদাবাদ তো বটেই রাজ্যের  সংখ্যালঘু সমাজের মধ্যে খুশির হাওয়া দেখা দিয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষা মহলেও এসেছে নতুন জোয়ার। সংখ্যালঘু পরিবারের মেয়েরা যে পড়াশোনায় সমানতালে এগিয়ে চলেছে রুমানা সুলতানা প্রথম হওয়াতে তা প্রমাণিত হলো। আসলে ২০২১ এর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি করোনা আবহে তা বন্ধ করতে সরকার বাধ্য হয়েছে।

Advertisement

পরীক্ষা হলেই এই রেজাল্ট কি হতো রুমানা সুলতানার অনেকের মনেই প্রশ্ন আসতেই পারে। কিন্তু রুমানা বরাবরই একজন মেধাবী সন্তান হিসাবে পরিচিত। সে পেয়েছে পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯। এবং গোটা রাজ্যে এই নম্বর সে একাই পেয়েছে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রীর এই সাফল্যে শুধু তার পরিবার বা প্রতিবেশীরাই নন, উচ্ছ্বসিত রাজ্যের শিক্ষামহল।

মুর্শিদাবাদের কান্দি পুরএলাকার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের হোটেল পাড়া বাসিন্দা রুমানা সুলতানা। কান্দি মণীন্দ্রচন্দ্র গার্লস স্কুলের ছাত্রী সে। শিক্ষক পরিবারের সন্তান রুমানা। বাবা রবিউল আলম ভরতপুর থানার অচলা অচলা বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক। মা সুলতানা পারভীন ভরতপুরের গয়সাবাদ অচলা বিদ্যামন্দিরে শিক্ষিকা। ফলে ছোটবেলা থেকে জ্ঞানার্জনে আগ্রহের একটা পরিবেশ ছিলই। রুমানা নিজেও পড়াশোনা করেছে ভালবেসে, স্রেফ পরীক্ষায় ভাল ফল করার প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব নিয়ে নয়। আর তারই ফল পেল সে হাতেনাতে। ২০১৯ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় ৬৮৬ নম্বর পেয়ে রাজ্যের মধ্যে পঞ্চম স্থান দখল করেছিল রুমানা। বিজ্ঞান বিভাগে ভরতি হওয়া ছাত্রীর লক্ষ্য ছিল, উচ্চ মাধ্যমিকে আরও ভাল ফল করার। লক্ষ্য পূরণ হয়েছে তার।

পরীক্ষা ছাড়া উচ্চমাধ্যমিকে উত্তীর্ণ ৯৭.৬৯ শতাংশ, প্রথম দশে ৮৬ জন। ২০২১ সালে অতিমারী করোনা (Corona Virus) আবহে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি। মাধ্যমিক এবং একাদশ শ্রেণির নম্বরের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করেছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।

বৃহস্পতিবার ফলাফল ঘোষণা করতে গিয়ে সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস বলেন, ”এবারে সর্বোচ্চ নম্বর পাঁচশোর মধ্যে ৪৯৯। সম্ভবত এই নম্বর একজনই পেয়েছে। মুর্শিদাবাদের এক মুসলিম কন্যা।” তবে এর বেশি আর তিনি একটি তথ্যও দেননি।

অবশ্য রুমানা বলেছেন পরীক্ষা না দেয়ার কষ্ট তার মধ্যে রয়েছে তবে তার এই সাফল্যের নেপথ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ভূমিকা কে অস্বীকার করা যাবে না একইসঙ্গে তিনি তার বাবা-মায়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ