ফুলের তোড়া নয়, দাবি পত্র নিয়ে মমতা সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা করা উচিত সংখ্যালঘুদের, বাংলার জনরবের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন সংখ্যালঘু সমাজের ব্যক্তিত্বরা
বাংলার জনরব ডেস্ক : প্রতি রবিবার বাংলার জনরব নিউজ পোর্টালের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে মুখোমুখি অনুষ্ঠান। সোশ্যাল মিডিয়ায় সম্প্রচারিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকেন রাজ্যের বিশিষ্ট মানুষজন। গতকাল ১৮ ই জুলাই রবিবার বাংলার জনরবের মুখোমুখি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গ মাদ্রাসা শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মী সমিতির মুখপাত্র ও ফুরফুরা শরীফের জমিয়তে উলামায়ে বাংলার যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন এবং বিশিষ্ট সংখ্যালঘু সমাজের ব্যক্তিত্ব শিক্ষক নেতা মাদ্রাসা ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা মাওলানা আব্দুল মোমেন।
এই আলোচনা সভার বিষয়বস্তু ছিল মমতা সরকারের জনমুখি প্রকল্প বাস্তবায়নে সমস্যা ও সমাধান। এই আলোচনায় অংশ নিয়ে সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বাংলার মানুষ যে প্রত্যাশা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে তৃতীয় বারের জন্য নবান্নের মসনদে বসিয়েছেন, তিনি সেই প্রত্যাশা পূরণ করবেন আশা করি। সংখ্যালঘু সমাজের সমস্যা নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন সমস্যা অনেক আছে সমাধানের পথ তৈরি করতে হবে সমাধানের পথ শুধুমাত্র সরকার করবে না সমাধানের পথ করতে হলে সাধারণ মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে এবং যারা সমাজ নিয়ে চিন্তাভাবনা করছেন তাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন বর্তমান সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী গোলাম রব্বানীর প্রশংসা করে বলেন,তিনি খুব ভালো মানুষ সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করবেন এই প্রত্যাশা আমরা তার প্রতি রাখছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুদিন পর বাংলার সংখ্যালঘু সমাজকে পূর্ণমন্ত্রী উপহার দিয়েছেন এজন্য তার কাছে আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
এরপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মাওলানা আব্দুল মোমেন বলেন, আমাদের সমাজের মূল সমস্যা হচ্ছে আমরা নেতাদের তৈল মর্দন করতে ব্যস্ত তাই কাজের চেয়ে ও কাজ হচ্ছে বেশি। তিনি বলেন এটা খুব ভালো কথা রাজ্যের সংখ্যালঘু দপ্তরের পূর্ণ মন্ত্রী হয়েছেন কিন্তু তাকে কেন্দ্র করে যেভাবে ফুলের তোড়ার বহর বইছে তা নিয়ে আমাদের মনে সন্দেহ দেখা দিয়েছে কাজ আদৌ হবে তো। ফুলের মালা নয় ,ফুলের তোড়া নয় ,দাবি পত্র দিতে হবে মুসলিম সমাজকে।
তিনি কটাক্ষের সুরে বলেন সংবাদপত্রের ছবি ছাপিয়ে কিছু ব্যক্তি নিজেদেরকে জাহির করতে ব্যস্ত অথচ সংখ্যালঘু সমাজ যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, বাংলার সংখ্যালঘু সমাজ দুই হাত উপুর করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে ভোট দিয়েছেন তারা প্রত্যাশা করছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাদের প্রত্যাশা পূরণ করবেন তা নয় অন্তত কিছু প্রত্যাশা পূরণ করবে তা করতে হবে তা করার জন্য আমাদেরকে উদ্যোগী হতে হবে। কোন মন্ত্রী কোন আমলা সংখ্যালঘু সমাজের স্বার্থে তেমন কিছু করতে পারবে না যতক্ষণ না সংখ্যালঘু সমাজ নিজে থেকে জেগে উঠে।
এক প্রশ্নের উত্তরে সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে সামাজিক প্রকল্প গুলি বাংলায় চালু রয়েছে তা আদৌ কার্যকরী হচ্ছে কিনা তার সুযোগ সুবিধা বাংলার প্রান্তিক মানুষ পাচ্ছে কিনা সেদিকে নজরদারি চালাতে হবে।
এই প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল মোমেন বলেন, বাংলার মানুষের জন্য চালু করা যে সামাজিক প্রকল্প সেগুলো বাস্তবায়ন কতটা হবে আর কতটা হবে না তার পুরোটাই নির্ভর করছে সদিচ্ছার উপরে শাসকদলের। সে দিকে নজর দিতে হবে ।তবে ইনফরমেশন অ্যাক্ট অনুসারে আমরা এই বিষয়গুলোর উপর নজরদারি চালাতে পারি।
এখন সবার খবরের সিইও বিশিষ্ট সাংবাদিক আবদুল আজিম প্রশ্ন করেন সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেনকে ফুরফুরা শরীফের এক পীরজাদা বলছেন, ফুরফুরা শরীফের কোনো উন্নয়ন হয়নি অন্যরা বলছেন উন্নয়ন হয়েছে ফুরফুরার কতটা উন্নয়ন হয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে সৈয়দ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ফুরফুরার গেলেই বুঝতে পারবেন কতটা উন্নয়ন হয়েছে উন্নয়ন যে আগের তুলনায় অনেকটাই হয়েছে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।
মাওলানা আব্দুল মোমেন তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, সংখ্যালঘু সমাজের জন্য শুধু নয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সার্বিক উন্নয়নে চেষ্টা করে চলেছে। বামেদের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে তা সংখ্যালঘু সমাজের পাড়ার কাছে গিয়ে শেষ হয়ে যেত। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমলে যে উন্নয়ন হয়েছে সে উন্নয়ন সংখ্যালঘু সমাজ পর্যন্ত পৌঁছেছে। এটাই বামেদের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের তফাৎ।
তিনি বলেন, ভাঙ্গড় হসপিটাল সংস্কার করতে হবে। ভাঙ্গড় এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকীর মন্তব্যকে ঘিরে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন আমরা খোঁজ নিয়ে দেখবো সত্যিই যদি এতগুলো গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকে তাহলে অবশ্যই সেটা আমাদের কাছে খুব দুঃখজনক আবার মমতা সরকারের কাছে সেটা লজ্জাজনক বলে চিহ্নিত হবে।
এক ঘন্টা কুড়ি মিনিট ধরে চলা এই মুখোমুখি অনুষ্ঠানের লিংক আমরা এই খবরের সঙ্গে দিলাম আগ্রহীরা পুরো অনুষ্ঠান টা দেখবেন। আশা করি ভালো লাগলে শেয়ার করবেন সাবস্ক্রাইব করে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন। মনে রাখবেন বাংলার জনরব শক্তিশালী হলে বাংলার মানুষের কণ্ঠস্বর শক্তিশালী হবে। সাক্ষাৎকার এর পুরো অংশটি আপনারা আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে দেখতে পাবেন আমরা এই খবরের সঙ্গে লিংকটা দিলাম।