দেশ 

দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থেকে শুরু করে বিরোধী দলের রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোন ট্রাপিং হচ্ছে অভিযোগ বিজেপি সাংসদের, অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় দেশ

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থেকে শুরু করে একাধিক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এমনকি সিবিআই এবং ইডির কর্মকর্তাদের ফোন ট্রাকিং এর অভিযোগ উঠল। গতকাল রবিবার রাতে এই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তিনি অভিযোগ করেছেন ইসরাইলি সফটওয়্যার, পেগাসাস (Pegasus Project) এর মাধ্যমে আড়ি পাতছে দেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ফোনে। পাশাপাশি, আড়ি পাতা হচ্ছে মোদির মন্ত্রিসভার সদস্যদের ফোনে এবং আরএসএস নেতাদের ফোনেও।

এখানেই শেষ নয় আন্তর্জাতিক 2 সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশ করে বলেছেন ভারতবর্ষের বেশ কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব সেদেশের সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিচারপতি থেকে শুরু করে বিচারপতিদের এবং সিবিআইয়ের কর্মকর্তাদের ফোন  ট্যাপিং করা হচ্ছে। বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ এর অভিযোগের আগেই ভারতের অন্যতম প্রথমসরির নিউজপোর্টাল দা ওয়ার এই খবর করেছে। তারা তাদের প্রতিবেদনে দাবি করেছে শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্টের  বিচারপতিরা নয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও অনেক ব্যবসায়ীদেরও ফোন ট্র্যাক করা হয়েছে।

Advertisement

এই ঘটনা সামনে আসতেই কেন্দ্রীয় সরকার বেশ খানিকটা অস্বস্তিতে পড়েছে। যদিও বিজেপি সাংসদের দাবি মতো কেন্দ্রীয় সরকারের বেশকিছু মন্ত্রীর ফোন ট্র্যাক করা হয়েছে তা সত্ত্বেও এখন কেন্দ্রের কাছে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা দাবি করেছেন অবিলম্বে বিষয়টি তদন্ত করা হোক। অন্যদেশের সফটওয়্যার সংস্থা কেন এ দেশের নাগরিকদের ফোন ট্র্যাক করবে সে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। আজ সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন এই মুহূর্তে ফোন ট্রাপিংয়ের খবরটি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর এই বাদল অধিবেশনে যে তার প্রভাব পড়বে তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

যদিও রবিবার রাতে কেন্দ্রের সাফাই, এই ধরনের কোনও হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেনি। কেন্দ্রের পালটা, ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তার কোনও ভিত্তি নেই। সরকারের তরফে আরও বলা হয়েছে, ভারত একটি মজবুত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে সব নাগরিকের গোপনীয় রক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়। এই প্রতিশ্রুতি বজায় রাখতে ২০১৯-এ পার্সোনাল ডেটা প্রোটেকশন বিল আনা হয়েছে। ২০২১-এ আনা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি আইন, যাতে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত থাকে।

এর আগে রবিবার বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদের অভিযোগের আগেই দুই আন্তর্জাতিক সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ান এবং ওয়াশিংটন পোস্ট দাবি করে, ইসরায়েলি এই সংস্থা গোটা বিশ্বে যাঁদের ফোন ও হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পেতেছিল, সেই তালিকায় ভারতীয় রাজনীতিক-বিচারপতি ছাড়াও সিবিআই, ইডির শীর্ষ অফিসারও আছেন। বিদেশি দুই পত্রিকার প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভারতের প্রায় সব বিরোধী নেতানেত্রীকে তো বটেই, মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্যদের ফোন এবং হোয়াটসঅ্যাপ কলে আড়িপাতা হয়েছে। এই বিষয়ে একটি রিপোর্টও নাকি শীঘ্রই প্রকাশ পাবে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে। যদিও গোটা বিষয়টিকেই একটি ‘শক্তিশালী গুজব’ বলে উল্লেখ করেছেন স্বামী। বিস্ফোরক এই দাবি করে রবিবার সকালে টুইট করেন তিনি। দাবি করেছেন, কাদের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে, সেই তালিকা বিস্তারিত পেলেই তিনি প্রকাশ করবেন। সেই টুইটের পালটা উত্তর দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। তিনি ওই আড়িপাতার তালিকায় শুধু যুক্ত করে দিয়েছেন, ‘‘…অনেক বিরোধী দলের সদস্যও’’। অর্থাৎ, বিরোধী দলের সদস্যদের ফোনেও আড়ি পাতা হচ্ছে বলে তাঁর অভিযোগ। টুইট করেছেন পি চিদম্বরমের পুত্র কার্তি চিদম্বরমও। তিনিও পেগসাসের কথা উল্লেখ করেছেন। তবে স্বামীর মতো স্পষ্ট করে নয়। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘…পেগাসাস বিস্ফোরণ ঘটাতে চলেছে।’

পেগাসাস আসলে একটি স্পাইওয়্যার। ইজরায়েল NSO নামের সংস্থার তৈরি এই স্পাইওয়্যারের সাহায্যে তামাম দুনিয়ার রাজনৈতিক এবং সমাজকর্মীদের ফোন থেকে শুরু হয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাদের গতিবিধির উপর নজরদারি চালানো হয়। বছর দুয়েক আগে ভারতেই এই সংস্থার বিরুদ্ধে আড়িপাতার অভিযোগ উঠেছিল। এবারও একই অভিযোগ উঠল। যদিও ইজরায়েলি কোম্পানির দাবি, তারা শুধুমাত্র সরকারি এজেন্সিকে এই সফটওয়্যার দিয়ে সাহায্য করে। ভারতে কীভাবে তাদের সফটওয়্যার দিয়ে আড়িপাতা হচ্ছে সেই অভিযোগ অবশ্য তারা অস্বীকার করেছে।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ