কলকাতা 

প্রস্তাব/১ : রাজ্যে সাম্প্রদায়িক অশান্তি রুখতে কড়া আইন প্রবর্তন করা উচিত : ড. আবদুস সাত্তার

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিপুল জনাদেশ নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এরপর বাংলার মানুষের জন্য তিনি কী করবেন সে দিকেই তাকিয়ে আছে জনতা। তবে রাজ্যের সংখ্যালঘুরা বিপুল ভোট মমতাকেই দিয়েছেন তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংখ্যালঘু উন্নয়নে কতটা কাজ করতে পারবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে প্রাক্তন রাজ্যের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রী ড. আব্দুস সাত্তার ফেসবুক পেজে কলম ধরেছেন তিনি তিনটি প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে দিয়েছেন যাতে তা অতি দ্রুত বাস্তবায়ন করা হয়। সেই তিনটি প্রস্তাব আমরা ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করে যাব। আজ প্রথম কিস্তি।

আবদুস সাত্তার : ২০২১ – এর নির্বাচনোত্তর পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বাজেট অধিবেশন জুলাই ০২ তারিখে শুরু হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, বাজেট অনুমোদনের বাইরে পশ্চিমবঙ্গ বিধান পরিষদ গঠন করে কিছু কিছু পছন্দসই ব্যক্তিকে পুনর্বাসন দেওয়াই নাকি সরকারের মুখ্য অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এতদসত্ত্বেও, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষন করছি——

Advertisement

ধুলাগড়, হাজিনগর, বাদুড়িয়া তেলেনিপারা এবং রামনবমীকে কেন্দ্র করে আসানসোল – রানিগঞ্জ- কাকিনারা – টিটাগর সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ধর্মীয় অস্ত্রধারীদের যে উন্মত্ততা ও তাণ্ডব রাজ্যবাসী দেখেছিলেন তাতে মনের মধ্যে আতঙ্কের পরিবেশ, শিহরন বয়ে গিয়েছিল।

রাজনৈতিক হিন্দুত্ববাদী দেশভক্তদের অস্থির পদচারনার মধ্যে দিয়ে দেশমাতৃকাকে রক্ষা করার এক ছদ্মবেশী আহ্বান আছে । বিদ্বেষকেও তারা পুজোর অঙ্গ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এই রাজনৈতিক আহ্বানে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষিত, সংস্কৃতি প্রেমীরাও নানা ভাবে জেনে না জেনে আক্রান্ত হচ্ছেন! পরিণতিতে কি বিদ্বেষ সর্বগ্রাসী হচ্ছে না? তাই কি ছোটো ছোটোদের হাতে শিশুপাঠ্য বই নয়, আমদানি করা খাপ খোলা তলোয়ার হয়ে উঠে এই বিদ্বেষের প্রতীক, সমর চিত্র ? সুকুমারমতি এই সমস্ত কচিকাঁচাদের কী কারণে রণসাজে সজ্জিত করা হচ্ছে? ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা একটি বিশেষ দলের নেতারাই বা কেন অস্ত্র প্রদর্শনে মরিয়া হয়ে যাচ্ছেন?

উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনীতির এই পরম্পরা ‘আমরা — ওরা’র নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছে। রাজনীতির এই বিনির্মাণে সব থেকে বিপন্ন হয়েছে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, আইনের শাসনের মতো ভারতীয় সংবিধানের মূল স্তম্ভগুলো । ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গরিব, পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক জনগোষ্ঠী , বিশেষত মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ।

উপরিউক্ত এই ভাবনা থেকেই কংগ্রেস সরকার রাজ্যসভায় পেশ করেছিল ‘ The Communal Violence ( Prevention, Control and Rehabilitation of Victims) Bill 2005’ । আরএসএস- বিজেপির প্রবল বিরোধিতায় বিলটি পাশ হয়নি। আবারও পরিমার্জন করে ‘ The Prevention of Communal Violence ( Access to Justice and Repararations) Bill 2013’ – এরও একই অবস্থা হলো!

এখন প্রশ্ন হলো , পশ্চিমবঙ্গের মতো আপাত শান্তির মরুদ্যানকেও কি কিছু কিছু শক্তি সাম্প্রদায়িকতার বিষাক্ত ছোবলে গ্রাস করতে চাইছে না ? ভুলে গেলে চলবে না – পরাজিত হলেও প্রধান শক্তিরূপে হাজির হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের একাংশের খবর অনুযায়ী ‘ চানক্য’ – এর দলে যোগদান উপলক্ষে এই কিছুদিন আগেও শোনা গেলো — একটি বিশেষ মহল থেকে পশ্চিমবঙ্গে নাকি সম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা চলছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যা ঘটেছে তাতে কথাটা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

তাই রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে প্রস্তাব —-

এই গুরুত্বপূর্ণ বিলটি কি আপনি এই বিধানসভা অধিবেশনে উত্থাপন ও পাশ করানোর কথা ভাবতে পারেন না ?


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ