কলকাতা 

শীতলকুচিতে গুলি চালানোর ঘটনায় কেঁচো ঘুঁড়তে কেউটো বের হতে পারে মনে করছে গোয়েন্দারা ! প্রাক্তন এসপির মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করল সিআইডি

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরি : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতো সিআইডি তদন্ত চলছে শীতলকুচি কান্ডে । ভোট চলাকালীন সময়ে শীতলকুচিতে চার ভোটারকে গুলিকে মারে কেন্দ্রীয় বাহিনী । এনিয়ে ভোট যুদ্ধ জমে ওঠে । এটাকে হাতিয়ারকে হিন্দু-মুসলিম বিভাজন করার চেষ্টা করে বিজেপি । কিন্ত সেই সময় মুখ্যমন্ত্রী কথা দিয়েছিলেন এর সিআইডি তদন্ত হবে । সেই মতো সিআইডি তদন্ত চলছে । ঘটনা ঘটার পর জেলার তৎকালীন এসপি দেবাশিষ ধর সাংবাদিক বলেছিলেন , কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কাছ থেকে রাইফেল কেড়ে নেওয়া চেষ্টা হয় । প্রায় তিনশো জন জনতা কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে ধরেছিল ফলে বাহিনী বাধ্য হয়ে গুলি চালিয়েছে । তৎকালীন এসপি-র এই বয়ান নিয়ে তোলপাড় হয়েছিল । তবে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ঘিরে রাখার কোনো ছবি ও ভিডিও সেই সময় দেখাতে পারেননি এসপি দেবাশিষ ধর ।

সিআইডি এই ঘটনার তদন্তভার হাতে নেওয়ার পরেই তৎকালীন এসপি দেবাশিষ ধরকে তলব করে । জানা গেছে মঙ্গলবার কোচবিহারের প্রাক্তন এসপি দেবাশিষ ধরকে তলব করে সিআইডি । বেশ কয়েক ঘন্টা জেরা করা হয় তাঁকে । তাঁর বক্তব্যের মধ্যে অনেক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে । তদন্তকারী অফিসারদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, শীতলকুচিতে দুটি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটলেও একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে । কেন একটি ? এই প্রশ্নের সদুত্তর  দেবাশিষবাবু দিতে পারেননি বলে সূত্রের খবর ।

Advertisement

তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, কেন্দ্রীয় বাহিনী গুলি চালানোর পর ওই বুথ যে খালি হয়ে যায় তা কি তিনি নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছিলেন? জবাবে দেবাশিসবাবু জানান, জানাননি তিনি। কেন তিনি কমিশনকে সেকথা জানাননি এই প্রশ্নের মুখে তিনি জানান, ঘটনার ঘনঘটায় তাঁর মনে ছিল না। তবে তিনি ডিজি এবং এডিজিকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন । তবে তিনি লিখিতভাবে কিছু জানাননি ।

গোয়েন্দারা তাঁর কাছে জানতে চান, ঘটনার দিন কি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তিনি? জবাবে দেবাশিস বাবু জানান, না, যাননি তিনি। ঘটনার দিন এসডিপিও ও আইসি গিয়েছিলেন । তাঁদের কাছ থেকে কোনো রিপোর্ট চেয়েছিলেন কিনা ? এই প্রশ্নের উত্তরে দেবাশিষ জানিয়েছেন, না । এতবড় ঘটনা ঘটার পর কেন রিপোর্ট তলব করেননি এসপি তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন তদন্তকারী অফিসাররা । তবে ঘটনার দুদিন পরে তিনি ওখানে গিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন। কিন্ত সন্ধ্যা হয়ে যাওয়ায় তেমনভাবে মানুষের সঙ্গে তিনি কথা বলতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ।

তাঁকে প্রশ্ন করা হয, তাহলে কীসের ভিত্তিতে সাংবাদিক বৈঠক করলেন তিনি? জবাবে তিনি জানান, CRPF-এর আধিকারিক তাঁকে যা জানিয়েছিলেন সেকথাই সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি। প্রাক্তন এসপির কথাবার্তার মধ্যেই অসঙ্গতি অনেক রয়েছে বলে সিআইডি আধিকারিকরা মনে করছেন । তাঁকে সম্ভবত মাথাভাঙার আইসির সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করা হতে পারে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে জানা যাচ্ছে ।

এরপরেই গতকাল বুধবার কোচবিহারের প্রাক্তন এসপি দেবাশিষ ধরের মোবাইল ফোন সিআইডি বাজেয়াপ্ত করে বলে জানা গেছে ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ