আন্তর্জাতিক 

আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে মিথ্যেবাদী প্রেসিডেন্টের তকমা পেলেন ট্রাম্প! চার বছরে ৩০,৫৭৩টি মিথ্যা কথা বলেছেন দাবি ওয়াশিংটন পোষ্টের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : আমেরিকার ইতিহাসে তো বটেই বিশ্বের ইতিহাসে তিনি একমাত্র নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি যিনি তাঁর কার্যকাল মেয়াদে সবচেয়ে বেশি বির্তকের মধ্যে পড়েছেন । আমেরিকার মতো দেশে ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রপতি কী চার বছর পদে থাকলেন তা নিয়ে গবেষণা হতে পারে । তিনি হেরে গেছেন । হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে গেছেন । কিন্ত তাঁর ইমপিচমেন্টের শুনানী এখনও বাকি আছে । ইতিমধ্যে একটি তথ্যে ফের অস্বস্তি বাড়ল আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে মিথ্যেবাদী প্রেসিডেন্টের তকমা বসে গেল তাঁর নামের পাশে। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি সকালে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত তিনি প্রকাশ্যে ৩০ হাজার ৫৭৩ বার মিথ্যে দাবি করেছেন বলে জানা গিয়েছে।

আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তারা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগেও বিচক্ষণ হিসেবে তেমন সুখ্যাতি ছিল না ট্রাম্পের। নির্বাচনী প্রচারেও বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি করতে দেখা যায় তাঁকে। তাই তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে প্রথম ১০০ দিন তাঁর প্রতিটি মন্তব্যের রেকর্ড রাখতে শুরু করে তারা। পরে পাঠকদের আর্জি মেনে নিয়মিত রেকর্ড রাখা শুরু হয়।

Advertisement
সত্যাসত্য যাচাই করে ট্রাম্পের মন্তব্যের মধ্যে থেকে সঠিক এবং ভুয়ো তথ্য আলাদা করার জন্য বিশেষ ‘ফ্যাক্ট চেক টিম’ও তৈরি করা হয়। গত বুধবার হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প বিদায় নেওয়ার পর সেই হিসেব মেলানো শুরু হয়। তাতেই ট্রাম্পের সমস্ত ভুয়ো দাবির যোগফল ৩০ হাজার ৫৭৩-এ গিয়ে ঠেকেছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম বছরে প্রকাশ্যে দিনে অন্তত ৪টে করে মিথ্যে বলেছেন। দ্বিতীয় বছরে তা বেড়ে হয় দৈনিক ১৬টি। তৃতীয় বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় দিনে ২২টি এবং চতুর্থ বছরে তা বেড়ে হয় দিনে ৩৯টি! হোয়াইট হাউসে প্রথম ২৭ মাসে ট্রাম্প ১০ হাজার মিথ্যে বলার রেকর্ড পার করে ফেলেন বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তী ১৪ মাসে মিথ্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার। তার পরের পাঁচ মাসে তাঁর বলা মিথ্যের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।

তবে জনসভা এবং নিজের টুইটার হ্যান্ডলেই ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি মিথ্যে দাবি করেছেন বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। তারা জানিয়েছে, অভিবাসীদের দল সীমান্তে পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে ধেয়ে আসছেন বলে দাবি করে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-কেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। ২০১৯ সালে ফোনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তিনি জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। ওই বিষয়ে ৪ মাসে প্রায় ১ হাজার মিথ্যে কথা বলেন ট্রাম্প।

২০২০ সালে অতিমারির প্রকোপে গোটা দেশ যখন যুঝছে, সেই সময়ও ট্রাম্প মিথ্যে বলা থেকে বিরত হননি। বরং তা আগের তুলনায় বেড়ে যায় বলে দাবি করেছে ওই সংবাদপত্র। তাদের দাবি, করোনাভাইরাস নিয়ে আড়াই হাজারেরও বেশি মিথ্যে দাবি করেছেন ট্রাম্প। অক্টোবর মাসে নিজে কোভিডে সংক্রমিত হওয়ার পর ৬ দিন চুপ করে ছিলেন তিনি। তবে সব মিলিয়ে ওই মাসে ট্রাম্প মোট ৪ হাজার মিথ্যে দাবি করেন। অর্থাৎ ওই সময়ে দিনে প্রায় ১৫০টি মিথ্যে দাবি করেন তিনি।

নির্বাচন নিয়েও একই কাজ করে গিয়েছেন বলে হিসেব দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। তাদের দাবি, ভোট কারচুপি সংক্রান্ত কমপক্ষে ৬০টি মামলা আদালতে খারিজ হয়ে গেলেও, ৩ নভেম্বর থেকে তা নিয়ে ৮০০-র বেশি মিথ্যে দাবি করেছেন তিনি। ৬ জানুয়ারি যে বক্তৃতায় ট্রাম্প সমর্থকদের ক্যাপিটলে হামলা চালাতে উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, সেই বক্তৃতায় তিনি ১০৭টি মিথ্যে দাবি করেন বলে দাবি ওই সংবাদপত্রের।

ট্রাম্পের সমস্ত মিথ্যে দাবির মধ্যে, যেগুলি উল্লেখযোগ্য, তারও তালিকা দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এমনকি একই মিথ্যে কমপক্ষে ৭৫০ বার তাঁকে আওড়াতে দেখা গিয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। বিগত ১০ বছর ধরে প্রেসিডেন্টদের মন্তব্যের রেকর্ড রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট।

সৌজন্যে : ডিজিটাল আনন্দবাজার।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

eighteen + fourteen =