শিলচর বিমানবন্দরেই আটক তৃণমূলের প্রতিনিধিদের, ৪০ কিমি দূরে গোপন ডেরায় নিয়ে যাওয়া হল তৃণমূলের সাংসদ-মন্ত্রী-বিধায়কদের
নিজস্ব প্রতিনিধি : অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ইস্যুতে শিলচরে এক নাগরিক কনভেনশনে যোগ দিতে তৃণমূল কংগ্রেসের আট সদস্যের এক প্রতিনিধি দল আজ দুপুরে শিলচর পৌছানোর পরই বিমানবন্দরেই ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে যায়। অসম নাগরিক রক্ষা সম্বন্বয় সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সভায় যোগ দেওয়ার জন্য ৬জন সাংসদ এবং দুজন বিধায়ক এর মধ্যে রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও ছিলেন তাঁরা শিলচর গিয়েছিলেন।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নাগরিক পঞ্জি থেকে নাম বাদ পড়া ৪০লক্ষ বাঙালি কী অবস্থায় আছেন তাও সরোজমিনে দেখতে গিয়েছিলেন এই প্রতিনিধিরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শিলচর বিমানবন্দর ছিল নিরাপত্তার ঘেরাটোপে। দুপুরে তৃণমূলের আট সদস্যের প্রতিনিধিদলকে বিমান থেকে নামতেই দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। বিমানে থাকা সংবাদমাধ্যমকে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পরে বিমান থেকে নামলেও, বিমানবন্দরের একটি ঘরে তাদেরকে আটকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় ঘরের সামনেই বসে পড়েন তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। বিমানবন্দরের মধ্যেই অবস্থান শুরু করে দেন তৃণমূলের প্রতিনিধিদল। প্রতিনিধিদলের সদস্য সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার দাবি করেছেন, তিনি ছাড়াও, সুখেন্দুশেখর রায়, মমতাবালা ঠাকুর, অর্পিতা ঘোষ এবং মহুয়া মৈত্রকে হেনস্থা করেছেন মহিলা পুলিশকর্মীরা। তাঁদের হেফাজতে থাকা মোবাইল ফোনও কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। শিলচরে যে হলে নাগরিক কনভেনশন হওয়ার কথা ছিল, সেই হলের তরফ থেকে অবশ্য বৃহস্পতিবার সকালে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, অনুষ্ঠানের জন্য কোনও আবেদন তারা পাননি। যদিও তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছিল সেখানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি রয়েছে তাদের কাছে।
অসম নাগরিক রক্ষা সমন্বয় সমিতির তরফ থেকে চেয়ারম্যান তপোধীর ভট্টাচার্য এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন তাদের সংগঠনের সদস্যদের বাড়ি থেকে বেরোতে দেওয়া হচ্ছে না। এদিকে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গেছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের সবাইকে শিলচর থেকে ৪০ কিমি দূরে একটি হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তাদের আজ রাখা হবে কাল সকালের বিমানে কলকাতা পাঠিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অসম প্রশাসন।
শিলচর বিমানবন্দরে তৃণমূল প্রতিনিধিদলকে হেনস্থা করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন অসমের ডিজিপি।অসম পুলিশের ডিজিপি কুলাধর সৈকিয়া জানিয়েছেন, অশান্তির আশঙ্কা থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিদের আটক করা হয়েছে। আমরা চাই না কোনও ভাবে রাজ্যের পরিস্থিতি খারাপ হোক। আর এই কারণেই বিমানবন্দরের বাইরের নিরাপত্তা যেমন বাড়ানো হয়েছে তেমনি অন্যদিকে তৃণমূলের প্রতিনিধিদেরও সেখানে যেতে নিষেধ করা হয়েছিল।
ডিজিপি দাবি করেছেন, সেই নিষেধাজ্ঞা অবঞ্জা করে নাকি বাইরে বের হওয়ার চেষ্টা করেন সাংসদ-মন্ত্রীরা। আর এজন্য তাঁদের শুধুমাত্র আটকানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি।