কলকাতা 

কংগ্রেসে কেন ছাড়ছেন বাঙালি মুসলিম নেতারা অধীরবাবু জানেন কী ?

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বুলবুল চৌধুরি :  আবদুর রহিম বাদুড়িয়ার কংগ্রেস বিধায়ক । গতকাল শনিবার তিনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন । তারপর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি করেছেন , তৃণমূল দলটাই বিধানসভা নির্বাচনের আগে উঠে যাবে । তৃণমূল উঠে যাবে কিনা সেটা বিচার করার আগে কংগ্রেস কেন ছাড়ছেন মুসলিম নেতারা ? সেটা আসুন জানা যাক । বাংলার জনরব-এর একান্ত সমীক্ষায় যা উঠে এসেছে তা তুলে ধরা হল : অধীর চৌধুরি এর আগেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি যখন ছিলেন তখন সৌমিক হোসেনের মত নেতা দল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন । মান্নান হোসেনের মত নেতাও চলে গিয়েছিলেন ,  আখরুজ্জামানের মত বিধায়কও তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন । এরকম বহু  মুসলিম নেতা দল ছেড়েছেন । এবার প্রথম ছাড়লেন আবদুর রহিম । একথা বলে নেওয়া যায় , সোমেন মিত্র যদি ২০১৮-র সেপ্টেম্বর মাসে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি না হতেন তাহলে লোকসভা ভোটের আগেই আবদুর রহিম তৃণমূলে চলে যেতেন । সোমেন মিত্র ও সরদার আমজাদ আলীর একান্ত অনুরোধেই আবদুর রহিম বা দিলু কংগ্রেসে থেকে যান ।

সোমেন মিত্র তাঁকে পুরস্কৃতও করেছিলেন । কিন্ত এবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হওয়ার পরে অধীরবাবু যে সংগঠন তৈরি করেছেন সেখানে বাঙালি মুসলিম নেতারা সব রকম বঞ্চিত হয়েছেন বলে অভিযোগ । সংখ্যালঘু সেলের রাজ্য সভাপতি করা হয়েছে যাকে তিনি বাঙালি মুসলিম নন। বাঙালি মুসলিমদের ভোট নিয়ে কংগ্রেস সাইনবোর্ড অক্ষুণ্ণ রাখবে , অথচ তাদেরকে পদ দেওয়া হবে না । তাহলে তারা কী করবে ?

Advertisement

প্রদেশ কংগ্রেসের সহ সভাপতি পদে যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদের কাজ কী ? তা আজও জানা যায়নি ।এমন কয়েক জনকে এমন জায়গার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাতে দলের সংহতি নষ্ট হবে । সরদার আমজাদ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উত্তর ২৪ পরগণার শহর -অঞ্চলের । আমজাদ সাহেব বাংলাভাষী , তিনি হিন্দিভাষী এলাকার দায়িত্ব পেয়েছেন । আবার একজন উর্দুভাষীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার গ্রামীণ এলাকার । তিনি ওই এলাকার ভূগোলটা ভাল করেই জানেন না । ফলে দল চাঙ্গা হওয়ার চেয়ে দলের কর্মীরা তৃণমূলে যে চলে যাবেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না । অধীরবাবু ক’দিন আগে মুসলিম নেতাদের সঙ্গে রাজারহাটে বৈঠক করে মুসলিমদের উন্নয়নের গল্প বলেছেন , সেই গল্পটা আপনার দলের মধ্যে কার্যকর করলে তবে তো বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠবেন ।

দক্ষিণবঙ্গের একটা জেলার কংগ্রেস সভাপতি কেন মুসলমান নেই ? মূর্শিদাবাদ -মালদা বাদ দিলে আর কোথাও মুসলিম নেতারা কেন গুরুত্ব পায় না। বীরভূমের জেলা সভাপতি করেছেন বিধায়ক মিল্টন রশিদকে , কিন্ত সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যানের পদ কেড়ে নিয়েছেন । মিলটন রশিদকেও আবার একক দায়িত্ব দেননি । সেখানেও কয়েক জনকে কার্যকরী সভাপতি করে দিয়েছেন ।

মধ্য কলকাতায় মূলত কংগ্রেস দলটা করে থাকে মুসলিমরা , সেখানে বিজেপি থেকে আসা সুমন দেকে কীভাবে জেলা সভাপতি করা হল , তা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ভেবে উঠতে পারছেন না ! আবার অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে , উত্তর ২৪ পরগণার জেলার  গ্রামীণ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন আবদুর রহিম দিলু । তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয় । অথচ আবদুল মান্নানকে বাদ দিলে তিনিই একমাত্র দক্ষিণবঙ্গের কংগ্রেস বিধায়ক । উত্তর ২৪ পরগণার জেলা ( গ্রামীণ) সভাপতি পদে তাঁকে রেখে দিলে কী সমস্যা ? তা বোঝা গেল না । অথচ তিনি দল ছাড়তেই মমতাকে গালাগালি শুরু করে দিলেন ।

অধীরবাবু কংগ্রেসকে যদি বিজেপির আদলে সাজাতে যান তাহলে তো স্বাভাবিকভাবেই মুসলিমরা তো আর আপনার মুখ দেখতে বসে থাকবেন না !


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

one + sixteen =