কলকাতা 

অমিত তো হুঙ্কার দিলেন মমতাকে ,পারবেন তো এ রাজ্যে মমতার সঙ্গে লড়তে রাজ্য বিজেপির নেতারা

শেয়ার করুন
  • 13
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিবেদক : বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বাংলা সফরে এসে গর্জালেন । তিনি দাবি করলেন,২০১৯ -এ মমতার সরকার উৎখাত হবে । অমিতের হুঙ্কারে রাজ্য বিজেপির নেতারা হয়তো চাঙ্গা খানিকটা হবেন কিন্ত তাঁরা কী পারবেন মমতার সঙ্গে পাল্লা দিতে। যে মেজাজে অমিত শাহ হুঙ্কার দিয়েছেন এর আগে কোন সর্বভারতীয় বিজেপি নেতা মমতাকে এভাবে হুঁশিয়ারি দেননি। অমিত শাহ দিলেন । আর দাবি করলেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে ২২ টি আসন জিতবে বিজেপি। কোথায় জিতবে ? কেমন করে জিতবে ? তার কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি দেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর মানুষটি। এ রাজ্যে আরএসএস কাজ করছে তারাও জোর দিয়ে বলার সাহস রাখে না যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি এখানে ২২টি আসন পাবে। সেই ক্ষমতা তো বিজেপির নেই। আর ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে উত্তরপ্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ কিংবা হিন্দী বলয়ে সাময়িক সাফল্য মিলতে পারে তবে বাংলায় তা মিলবে না। কারণ বাংলার মাটি রাজা রামমোহন রায়ের মাটি,বাংলার মাটি বিদ্যাসাগরের মাটি,বাংলার মাটি রামকৃষ্নের মাটি ,বাংলার মাটি হজরত ফতেহ আলি শাহ(রহ.) মাটি তাই খুব সহজে শুধু হিন্দু তাস খেলে এ রাজ্যের মানুষের মন জয় করা যাবে না।

এই রাজ্যের রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য হল গণ-আন্দোলন। আন্দোলন ছাড়া কোন সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। বামেদের ছিল দীর্ঘ কয়েক দশকের আন্দোলন, আর মমতার রয়েছে আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাস। অমিত শাহরা এ রাজ্যে কী আন্দোলন করেছেন? তার কোন ইতিহাস আছে। শুধু কথা দিয়ে এখানকার মানুষ ভোট দেবে না। তবে এটা মানতে হবে যে,রাজ্যে এই মুহুর্তে বিজেপি উঠে আসছে। আর এর নেপথ্যে রয়েছে শাসক দলের রাজনৈতিক ভুল । শাসক তৃণমূল কংগ্রেস যত কংগ্রেস এবং বামেদের অস্তিত্বকে শেষ করার চেষ্টা করছে ততই এ রাজ্যে বিজেপি উত্থান ডেকে আনছে। এছাড়া এ রাজ্যে বিজেপির উত্থান ঘটা সম্ভব নয়। আমাদের মনে হয়েছে সচেতনভাবে হোক কিংবা আধিপত্যবাদকে বিস্তার করার জন্যই শাসক তৃণমূল কংগ্রেস-সিপিএমকে শেষ করতে চাইছে ফলে স্বাভাবিক নিয়মেই মানুষ বিজেপির দিকে চলে যাচ্ছে।

Advertisement

তৃণমূল হয়তো ভাবছেন মুসলিম ভোট তাদের জয়কে সুনিশ্চিত করবে এটা ঠিক ধারণা নয়,একটা সময় এমন হবে যে মুসলিমদের একটা বড় অংশ বিজেপিতে চলে যেতে পারে ফলে শাসক দলের ভোট হাতছাড়া সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিকে লক্ষ রেখেই অমিত শাহরা হুঙ্কার দিচ্ছেন। তবে ২২ নয়, বিজেপি এই রাজ্যে ১০-১২টি আসনে শাসক দলের সঙ্গে টক্কর দিতে পারবে। কারন এই এলাকাগুলিতে মুসলিম ভোট ১০ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। বিজেপির হিসেবে যেসব এলাকায় মুসলিম ভোট কম সেখানে তাদের জেতার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। অমিত শাহ এই অঙ্ক থেকেই ২২টি আসন পাবেন বলে দাবি করছেন।

তবে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস যদি বহুদলীয় গণতন্ত্রের অস্তিত্ব স্বীকার করে কংগ্রেস-সিপিএমকে এই রাজ্যে রাজনীতি করার সুযোগ না দেয় তাহলে আগামী দিনে বিজেপির আগ্রাসনকে কোনভাবেই আটকাতে পারবে না। অমিত শাহদের হুঙ্কারকে ব্যর্থ করতে হলে অবশ্য ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে আরও বেশি করে মানুষের কাছাকাছি পৌছে দেওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তা না হলে অমিত শাহর হুঙ্কার কিন্ত বাস্তবে পরিণত হতে খুব বেশি সময় লাগবে না। কারণ ইতিমধ্যেই আরএসএস বিভাজনের রাজনীতি করে এ রাজ্যের দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদকে অনেকটাই স্পষ্ট করে তুলেছে।


শেয়ার করুন
  • 13
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

4 × 4 =