কলকাতা 

বিশ্বস্তদের পুরস্কৃত করলেন মমতা ; রাজ্যসভায় যাচ্ছেন অর্পিতা-মৌসম-সুব্রত-দ্বীনেশ

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের তৃণমূলের প্রাপ্য চারটি রাজ্যসভার আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন । কোনো সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে নয় । তিনি নজীরবিহীনভাবে টুইটে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছেন । তবে এবার দরের বাইরে কাউকে প্রার্থী করা হয় । গতবারের চারজন রাজ্যসভার সাংসদকেই বাদ দিয়েছেন মমতা । ২০২০-তে এই রাজ্য থেকে তৃণমূলের প্রার্থী হিসাবে যাঁরা রাজ্যসভায় যাচ্ছেন তাঁরা হরেন অর্পিতা ঘোষ , মৌসম বেনজির নূর , দ্বীনেশ ত্রিবেদী ও সুব্রত বক্সী । মৌসম ছাড়া সবাই তৃণমূল দলের পুরোনো কর্মী ।

২৬ মার্চ রাজ্যসভার ৫৭ আসনের জন্য নির্বাচন হবে। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের পাঁচটি আসন রয়েছে। রাজ্যের বিধানসভায় তৃণমূলের হাতে যে সংখ্যা রয়েছে, তাতে পাঁচটির মধ্যে চারটি আসনে তৃণমূলের জয় নিশ্চিত। এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই চার আসনের প্রার্থীদের নামই ঘোষণা করলেন।

Advertisement

প্রার্থীদের মধ্যে যাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই লিখেছেন, সেই অর্পিতা ঘোষ ছিলেন বালুরঘাটের সাংসদ। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে অর্পিতা হেরে যান বিজেপির সুকান্ত মজুমদারের কাছে। তবু অর্পিতাকে বালুরঘাট তথা দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে মমতা সরাননি। জেলা তৃণমূলের দায়িত্ব পুরোপুরি অর্পিতার উপরে দিয়ে দিয়েছিলেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন। এ বার রাজ্যসভায় পাঠানোর কথা ঘোষণা করে অর্পিতার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা মমতা সম্পূর্ণ করে ফেললেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মত।

পুনর্বাসন পাচ্ছেন মৌসম নুরও। উত্তর মালদহের কংগ্রেস সাংসদ মৌসম তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন লোকসভা ভোটের আগে। তার পরে তৃণমূলের টিকিটেই সেই আসনে লড়েন। কিন্তু বিজেপির খগেন মুর্মুর কাছে মৌসম হেরে যান। কিন্তু মৌসমে মমতার আস্থা কমেনি। মালদহ জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী করেন মৌসমকে। এ বার রাজ্যসভায় টিকিট দিয়ে ফের সংসদে পাঠানোর ব্যবস্থাও করে ফেললেন।

আর এক প্রার্থী দীনেশ ত্রিবেদী আগেও তৃণমূলের টিকিটে রাজ্যসভায় গিয়েছিলেন। তার পরে ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে ব্যারাকপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন দ্বীনেশ। দেশের রেলমন্ত্রীও হয়েছিলেন। এ হেন  দ্বীনেশ ত্রিবেদী গত লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুরে হেরে যান বিজেপির প্রার্থী অর্জুন সিংহের কাছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বীনেশকে সংসদে ফেরানোর ব্যবস্থা করে দিলেন।

দলের রাজ্য সভাপতি তথা সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুব্রত বক্সী অবশ্য এ বারের লোকসভা নির্বাচনে লড়েননি। তিনি দক্ষিণ কলকাতা থেকে পর পর দু’বার জিতে লোকসভায় গিয়েছিলেন (প্রথম বার উপনির্বাচনে)। ২০১৯ সালে তিনি আর ভোটে দাঁড়াননি। তাঁর আসন থেকে জেতেন মালা রায়। কিন্তু তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছেন সুব্রত বক্সী। দলের সর্বোচ্চ স্তরে মমতার সবচেয়ে আস্থাভাজন যে ক’জন, বক্সী তাঁদের অন্যতম।

বহু প্রলোভন থাকা সত্ত্বে তৃণমূল ছেড়ে অন্য কোনো দলে যোগ দেননি অর্পিতা ঘোষ । বরং বালুরঘাটে হেরে যাওয়ার পরও তিনি দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূলের সভাপতি হিসাবে কাজ করে গেছেন । দলীয় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুগত সৈনিক হিসাবে কাজ করেছেন । তারই পুরস্কার পেলেন অর্পিতা । মৌসম কংগ্রেস তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কারণেই তাঁকে হারতে হয়েছিল । স্বাভাবিকভাবে মালদাতে তৃণমূলকে শক্তিশালী করতে হলে মৌসমের এই পুরস্কার পাওয়া উচিত ছিল । মমতা তা দিলেন একটাই কারণে মমতার প্রতি আস্থা দেখিয়েই তিনি তৃণমূলে যোগ দিলেন । অন্যদিকে, দ্বীনেশ ত্রিবেদী গুজরাটের মানুষ হওয়া সত্ত্বে এবং ব্যারাকপুরে হেরে যাওয়া সত্ত্বে তৃণমূলের প্রতি আস্থা দেখিয়ে গেছেন । তারই পুরস্কার পেলেন দ্বীনেশ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

18 − 2 =