জেলা 

দিল্লির সহিংসতা থেকে মানুষের মনকে ঘুরিয়ে দিতেই করোনা ভাইরাস নিয়ে এত হইচই হচ্ছে : মমতা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : সমগ্র দেশ করোনাভাইরাসের জেরে কাঁপছে বললে অত্যুক্তি হয় না । গত সপ্তাহে দিল্লিতে কয়েক  দিন  ধরে চলা অশান্তির দাগ মুছতে না মুছতেই আবার নতুন করে করোনা ভাইরাস আতংক সমগ্র দিল্লিকে গ্রাস করেছে । আর এই আবহাওয়ায় মুখ খুললেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি আজ বুধবার বলেন , দিল্লির ঘটনা থেকে দেশবাসীর নজর ঘোরাতেই কি করোনাভাইরাস নিয়ে এত হইচই করছে কেন্দ্র তথা শাসক দল বিজেপি? এই প্রশ্নই উস্কে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মালদহের সুজাপুরের সভায় মমতার তোপ, টিভির লোককে দিয়ে করোনা করোনা করে আসল ঘটনা ঘুরিয়ে দিতে চাইছে কেন্দ্র। দিল্লি-হিংসার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘দিল্লিতে গুজরাত মডেলে গণহত্যা হয়েছে।’’

বুধবার মালদহের ছোট সুজাপুরে ছিল তৃণমূলের বুথভিত্তিক কর্মিসভা। সেই সভায় যোগ দিয়ে দিল্লির সংঘর্ষ নিয়ে বিজেপিকে তোপ দাগেন মুখ্যমন্ত্রী ‘‘পুরো গুজরাতের মডেল। গুজরাতে যা করেছিল, তারই পুনরাবৃত্তি হয়েছে দিল্লিতে। এটা দাঙ্গা নয়, আমি মনে করি এটা একটা গণহত্যা। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। শিশুর সামনে তাঁর বাবা, মা ভাই বোনকে কেড়ে নিয়েছে। আজও মানুষ জানে না, কত জন মারা গিয়েছে। সরকারি ভাবে বলছে ৫০-৫৫। কিন্তু আমাদের কাছে খবর আছে, অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।’’

Advertisement
মঙ্গলবার থেকেই দেশে করোনা আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসেছে। বুধবার তা আরও বেড়েছে। ইতালির একটি পর্যটক দলের ১৬ জন-সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২৮।  নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহেরা ঘোষণা করেছেন, হোলির উৎসবে যোগ দেবেন না। বিশেষজ্ঞরা জমায়েত-সমাবেশে যোগ দিতে নিষেধ করেছেন বলেই এই সিদ্ধান্ত, জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। কিন্তু মমতার অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবেই করোনা নিয়ে এত ঢাক ঢোল পেটানো হচ্ছে।

সম্প্রতি কলকাতায়  কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ-র সভায় যোগ দেওয়ার পথে মিছিল থেকে ‘গোলি মারো’ স্লোগান উঠেছিল। সেই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই তো কলকাতায় এসে মিটিং করে গেলে। কেউ বাধা দিয়েছে? অনুমতি না দিলেই বলত, এখানে গণতন্ত্র নেই। মিছিল করে মাথায় ফেট্টি বেঁধে বলছে ‘গোলি মার’। হরিদাসের দল, হিংসার রাজনীতি করছে। বলে কি না, ‘গোলি মার’। মনে রাখবেন, কলকাতা আর দিল্লি এক নয়। দিল্লিতে তুমি দাঁড়িয়ে থেকে দাঙ্গা করিয়েছ? আর বাংলাতে যারা স্লোগান দিয়েছে, আমি সাত-আটজনকে অ্যারেস্ট করিয়েছি। যারা জড়িত, তাদের সবাইকে গ্রেফতার করাব।’’

দিল্লির হিংসা নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করে মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় একটা ইঁদুর যদি কামড়ায়, সিবিআই এনকোয়ারি চাই। আর এত লোকের মৃত্যুর পরেও একটা জুডিশিয়াল এনকোয়ারি পর্যন্ত হল না। আমরা চাই এই ঘটনায় জুডিশিয়াল এনকোয়ারি হোক। গায়ের জোরে যা খুশি তাই করছে। সাংবাদিকরা যারা দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের অ্যাডভাইজরি দিল, এসব দেখানো যাবে না।’’

সাধারণ মানুষকে সাবধান করে মমতা বলেন, ‘‘বাংলায় কোনও ভাগাভাগি নেই। কোনও দাঙ্গা নেই। যারা দাঙ্গার নামে উস্কানি দেবে, তাদের থেকে সাবধান থাকবেন। কিছু লোক বাইরে থেকে আসবে, উস্কানি দিয়ে দাঙ্গা বাধিয়ে চলে যাবে। কিন্তু আপনার ক্ষতি হলে কেউ এগিয়ে আসবে না। আমরাই পাশে থাকব।’’

ছোট সুজাপুরের সভা থেকে নাগরিকত্ব ইস্যুতেও এ দিন ফের তোপ দেগেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলায় সিএএ (সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন), এনআরসি (জাতীয় নাগরিকপঞ্জি), এনপিআর (জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি) করতে দেব না। বাংলা থেকে কোনও মানুষের অধিকার কেউ কেড়ে নিতে পারবে না। সিটিজেনশিপ তো সারা বছরই চলে। যে পায়নি সে আবেদন করে। বিজেপির নেতাদের জিজ্ঞেস করুন, তোমার সিটিজেনশিপ কোথায়?’’

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

one × 4 =