নজীরবিহীন সিদ্ধান্ত : রাজ্যসভায় নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ থেকে একটি শব্দ বাদ দিলেন বেঙ্কাইয়া নাইডু
বাংলার জনরব ডেস্ক : স্বাধীন ভারতে সম্ভবত এই প্রথম রাজ্যসভায় দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের শব্দ বাদ দেওয়া হল । এই নজীরবিহীন ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সময় । তিনি বিরোধী দলকে আক্রমণ করতে গিয়ে কয়েকটি শব্দ এমন উচ্চারণ করেছিলেন তা নিয়ে হইচই পড়ে যায় । কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় এই ধরনের বক্তব্য ঠিক নয় বলে ।
এই পরিস্থিতিতে আজ রাজ্যসভা থেকে জানানো হয়েছে বাজেট অধিবেশনের সূচনায় সংসদের দুই কক্ষের যৌথ সিটিংয়ে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণের জন্য ধন্যবাদজ্ঞাপক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর জবাবি বক্তৃতার একটি শব্দ বাদ দিয়েছেন সভার চেয়ারম্যান এম বেঙ্কাইয়া নাইডু।
রাজ্যসভা সচিবালয় থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাজ্যসভার ৬ ফেব্রুয়ারির সন্ধ্যা ৬টা ২০ থেকে ৬টা ৩০ এর মধ্যে অধিবেশনের কিছুটা অংশ সভার কার্যবিবরণী থেকে ছেঁটে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন চেয়ারম্যান।
সংসদের উচ্চকক্ষের গোটা দিনের অধিবেশন পর্ব খতিয়ে দেখে কোনও বিশেষ অংশ আপত্তিকর, নিয়মসঙ্গত নয় দেখলেই নিয়মিত সভার রেকর্ড থেকে বাদ দিতে বলেন বেঙ্কাইয়া। একাধিকবার এটা ঘটেছে,তবে খোদ প্রধানমন্ত্রীর কোনও মন্তব্য বাদ পড়ার নজির সম্ভবত নেই।
জানা গিয়েছে, গতকাল ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) পর্ব দৃঢ় ভাবে সমর্থন করে ওই মন্তব্য করেন মোদি। বলেন, দেশের জনসংখ্যা সংক্রান্ত রেজিস্টার বা পঞ্জী আপডেট করার প্রক্রিয়া হাতে নেওয়া হয়েছে যাতে সরকারি উন্নয়ন কর্মসূচির আইনি প্রাপকদের হাতেই তা তুলে দেওয়ার কাজ আরও ভাল ভাবে করা যায়। এই সংক্রান্ত জনবিন্যাস সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য সংযোজনের কাজ চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিরোধী কংগ্রেসকে নিশানা করে তিনি অভিযোগ করেন, ওরা আগের অবস্থান পুরোপুরি বদলে ফেলেছে। বলেন, কংগ্রেস ২০১০–এ এনপিআর করেছিল, ২০১৫ সালে তাতে আপডেটও করা হয় ছবি ও আরও কিছু বায়োমেট্রিক তথ্য সংযুক্ত করে। মোদি আরও বলেন, বিরোধীরা সংকীর্ণ, নিজেদের মর্জিমতো রাজনৈচিক ভাষ্যের স্বার্থে এনপিআরের বিরোধিতা করছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করবেন না। এটা গরিবের বিরোধিতা।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে চলতি প্রতিবাদ আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য ছড়ানো হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন মোদি। বলেন, যে হিংসা ছড়ানো হল, তাকে আন্দোলনের অধিকার বলা হয়েছে। বারবার সংবিধানের নাম করা হয়েছে। সংবিধান রক্ষার কথা বলে অগণতান্ত্রিক কাজকর্ম আড়াল করার চেষ্টা হয়েছে। বিরোধীরা ভোটব্যাঙ্কের স্বার্থে নিজেদের পছন্দের ভাষ্য ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
গতকাল মোদির ভাষণের পর রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা শীর্ষ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদের বক্তৃতার একটি শব্দও বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন নাইডু। গুলাম নবি বলেছিলেন, কংগ্রেসও পাকিস্তান থেকে আসা নির্যাতিত অভিবাসীদের এদেশের নাগরিকত্ব দেওয়ার পক্ষপাতী, তবে এজন্য ধর্মের মাপকাঠিতে আইন তৈরি সমর্থন করে না। সৌজন্যে এবিপি আনন্দ