কলকাতা 

মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ভবিষ্যৎ কোন পথে ? সাংবিধানিক অধিকারের জন্য আমাদের আইনি লড়াই দাবি আবু সোহেলের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সেখ ইবাদুল ইসলাম : মামলার গোরোতে আটকে গেল মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন । গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে ডিভিশন বেঞ্চ রায় দিয়েছে জাতীয় স্বার্থে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশন রাজ্য সরকার অনুমোদিত মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করবে । তবে মাদ্রাসাগুলিতে সংখ্যালঘু স্ট্যাটাস বজায় থাকবে । অরুণ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় সংশোধনের জন্য আবেদন করে পরিচালন সমিতির পক্ষে আবেদনকারী কাঁথি রহমানিয়া । গতকাল শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চের কাছে এই আবেদন জানান কাঁথি রহমানিয়ার আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান । এই রাজীব ধাওয়ান বাবরি মসজিদ মামলায় মুসলিমদের পক্ষের আইনজীবী ছিলেন । প্রখ্যাত আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান তাঁর আবেদনে বেশ কয়েকটি সংখ্যালঘু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সরকারের মামলার উদাহরণ টেনে এনে সওয়াল করেন । এমনকি ২০১৯ সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতার চন্দনা দাসের এক মামলার রায়কে তুলে ধরে রাজীব ধাওয়ান প্রধান বিচারপতিকে বলেন , মাত্র কয়েক মাস আগেই তিন সদস্যের বেঞ্চ সংখ্যালঘু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা করার সমস্ত দায়িত্ব সংখ্যালঘুদের হাতেই দেওয়া হয়েছে । তারপর দুই সদস্যের বেঞ্চ এই রায় দেন । তাহলে একই আদালতের প্রায় একই সময়ে সংখ্যালঘু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান দুই ধরনের রায় বিভ্রান্ত তৈরি করেছে বলে রাজীব ধাওয়ান আবেদনে বলেন । রাজীব ধাওয়ানের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী আবু সোহেল ।

একই সঙ্গে তিনি ২০০২ সালের সুপ্রিম কোর্টের এক রায়কে তুলে ধরেন । ১১ জন বিচারপতি দেওয়া ওই রায়ে স্পষ্ট বলা হয়েছে সংখ্যালঘু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানে কোনোভাবেই রাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করতে পারবে না । এরপরেও বেশ কয়েকটি রায়কে তুলে ধরে গত ৬ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সংশোধনের আবেদন জানানো হয় । প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে , বিচারপতি ভূষণ গাভাই এবং বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চ মামলাটি গ্রহণ করেন । একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের কাছে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চেয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলেন বিচারপতিরা ।

Advertisement

এরফলে মাদ্রাসা সার্ভিস কমিশনের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে । বিগত কয়েক বছর ধরে মামলার কারণে মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ বন্ধ হয়ে গেছে । ফলে মাদ্রাসাগুলিতে শিক্ষা-ব্যবস্থা লাটে উঠেছে । এই প্রেক্ষাপটে ৬ জানুয়ারির রায়ের পর সবাই ভেবেছিল সমাধান হয়ে গেল । কিন্ত আবার নতুন করে মামলা রুজু হওয়ায় সমস্যা থেকেই গেল । এ বিষয়ে বাংলার জনরবের পক্ষ থেকে কথা বলা হয় কাঁথি রহমানিয়ার আইনজীবী আবু সোহেলের সঙ্গে তিনি বলেন , আমরা নিজস্ব কোনো স্বার্থের জন্য লড়াই করছি না । সাংবিধানিক অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য লড়াই করছি । সংবিধান সংখ্যালঘুদের যে অধিকার দিয়েছে তাকে রক্ষা করার জন্যই আমাদের লড়াই । এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন , সিএএ আইনে তো এদেশের মুসলিমদের নাগরিকত্ব হরণ করার কথা বলা হয়নি । তাহলে আন্দোলন কেন হচ্ছে ? কারণ সংবিধানকে বাঁচাতে হবে । সিএএতে বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেজন্যই দেশজুড়ে আন্দোলন হচ্ছে । সংবিধানের চোখে সকলেই সমান । আর সংবিধানের মৌলিক অধিকারেই সংখ্যালঘুদের অধিকারকে নিশ্চিত করা হয়েছে । সেই অধিকারকে রক্ষা করার জন্যই আমরা আইনি লড়াই চালাচ্ছি ।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

seventeen + 8 =