গনতন্ত্র সূচকে ৫১ তম স্থানে , সিএএ ইস্যুতে আন্তর্জাতিক স্তরে জোর ধাক্কা এক লাফে দশ ধাপ নিচে চলে গেল ভারতের গনতন্ত্র !
বাংলার জনরব ডেস্ক : স্বাধীনতার ৭২ বছর পর ভারতের গণতন্ত্রের ইতিহাসে এই প্রথম নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে । আর এই অভিযোগে সিলমোহর দিয়েছে ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইকনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। এই গবেষণা সংস্থা ১৬৭ টি দেশের উপর ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে সমীক্ষা করার পর একটি তালিকা তৈরি করেছে যাতে ভারতে নাম ৫১ তম স্থানে জায়গা হয়েছে । অবশ্য মোদী সরকারের আমলে গত বছরও এই সমীক্ষা করা হয়েছিল সেই সময় ভারতের স্থান ছিল ৪১ তম । মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দশ ধাপ পিছিয়ে গেল ।এই পতনের জন্য ভারতের নাগরিক অধিকার খর্ব হওয়াকেই দায়ী করছে ব্রিটিশ গবেষণা সংস্থা ইকনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)।
বিশ্বের কোন দেশের সরকার কতটা সক্রিয়, দেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া কতটা স্বচ্ছ, নাগরিক অধিকার কতটা সুরক্ষিত, রাজনৈতিক সংস্কৃতি কেমন, দেশের মানুষ রাজনীতির সঙ্গে কতটা যুক্ত, তা বিচার করে ২০০৬ সাল থেকে গণতন্ত্র সূচক প্রকাশ করে আসছে ইআইইউ। ২০১৯–এর হিসাবে তাতে ১০–এর মধ্যে ৬.৯ পেয়েছে ভারত। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে যা ছিল যথাক্রমে ৭.২৩ ও ৭.৮১। ২০১৪য় আবার ১০–এর মধ্যে ৭.৯১ পেয়েছিল ভারত।
এই পতনের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ভারত সরকারের সাম্প্রতিক বেশ কিছু সিদ্ধান্তকে দায়ী করেছে ইআইইউ। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, জম্মু-কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতি। বলা হয়েছে, ৩৭০ ধারা বিলোপ করার আগে উপত্যকায় বিশাল বাহিনী নামায় ভারত সরকার। নানা রকম বিধিনিষেধ আরোপ করে। স্থানীয় নেতা, যাঁরা কি না ভারতেই থাকার পক্ষে, তাঁদেরও গৃহবন্দি করা হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট পরিষেবা।
সিএএ-র কথাও উঠে এসেছে ওই রিপোর্টে। বলা হয়েছে, সরকারের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ দেশের মুসলিমরা। প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন বহু মানুষ। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাতেও এই ঘটনা ইন্ধন জুগিয়েছে বলে মনে করছে ইআইইউ।প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে প্রতিটি দেশের জন্য মোট চারটি বিভাগ তৈরি করেছে ইআইইউ। সেগুলি হল— পূর্ণ গণতন্ত্র, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র, মিশ্র শাসন ব্যবস্থা এবং স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থা। তাতে ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্র বিভাগে ঠাঁই হয়েছে ভারতের।
তবে তালিকায় ভারতের চেয়ে ঢের পিছিয়ে একদলীয় শাসনের দেশ চিন। ১০–এর মধ্যে মাত্র ২.২৬ পেয়ে ১৫৩তম স্থানে জায়গা হয়েছে তাদের। অন্য প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে পাকিস্তান রয়েছে ১০৮ নম্বরে, শ্রীলঙ্কা রয়েছে ৬৯–এ এবং বাংলাদেশ ৮০ নম্বরে।গণতন্ত্র সূচক তালিকায় একেবারে শীর্ষে রয়েছে নরওয়ে। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে আইসল্যান্ড। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে সুইডেন ও নিউজিল্যান্ড। পঞ্চম স্থানে রয়েছে ফিনল্যান্ড।
তালিকার প্রথম কুড়িতে জায়গা হয়নি আমেরিকার। তারা ‘ত্রুটিপূর্ণ’ বিভাগে ২৫তম স্থানে রয়েছে। জার্মানি এবং ব্রিটেন রয়েছে যথাক্রমে ১৩ এবং ১৪তম স্থানে। ২০তে রয়েছে ফ্রান্স। ১৩৫ নম্বরে রাশিয়া। উত্তর কোরিয়া রয়েছে সবার শেষে, অর্থাত্ ১৬৭ নম্বরে। সৌজন্যে : ডিজিটাল আনন্দবাজার ।