পঞ্জাব বিধানসভাতেও সিএএ আইন ও এনপিআর-এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব পাশ , বিরোধী হয়েও মমতা কেন নিরব ?
বাংলার জনরব ডেস্ক : কেরলের পর কংগ্রেস শাসিত রাজ্য পঞ্জাবও এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করল ।আজ পঞ্জাব বিধানসভার বিশেষ অধিবেশনে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পাশ করা হয় । প্রস্তাবে বলা হয়েছে ,সিএএ–র জন্য সারা দেশের সঙ্গে পঞ্জাবেও অস্থিরতা তৈরি হয়েছে, এই আইন বিভেদমূলক— এই সব অভিযোগ তুলেই প্রস্তাব পাশ করে কেন্দ্রকে এই আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে। এই আইন ভারতীয় সংবিধানের ‘ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্রে আঘাত’ হেনেছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে হয়েছে ওই প্রস্তাবে। এদিন বিধানসভায় এর পাশাপাশি জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি)-র বিরুদ্ধেও প্রস্তাব পাশ হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের নেতৃত্বে।
নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয়ে আইনে পরিণত হওয়ার পর থেকেই প্রতিবাদ–বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে সারা দেশ। উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ–সহ একাধিক রাজ্যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সেই উত্তাল পরিস্থিতির আঁচ কিছুটা কমলেও এখনও প্রতিবাদ–প্রতিরোধ অব্যাহত। এই পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে প্রথম কেরল বিধানসভায় পাশ হয় সিএএ–বিরোধী প্রস্তাব। বাম শাসিত কেরল সরকার আবার সুপ্রিম কোর্টেও এ নিয়ে মামলা দায়ের করেছে।
রাজ্যের মন্ত্রী ব্রহ্ম মহিন্দ্রা বিধানসভায় এই প্রস্তাব পেশ করেন বিধানসভায়। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে সেই প্রস্তাব পাশ হয়। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘‘সিএএ দেশের মধ্যে ক্ষোভে–বিক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, তৈরি হয়েছে সামাজিক অস্থিরতা।’’ আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ‘বিভাজন করতেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এই আইন তৈরি হয়েছে, যা আরও মানবিক চিন্তাভাবনার আধারে তৈরি করা যেত।’’
এই আইনের ফলে দেশের সংবিধানের ধর্মনিরপেক্ষতা নষ্ট হয়েছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে।এই বিষয়টি পঞ্জাব বিধানসভার প্রস্তাবেও উল্লেখ করা হয়েছে। ‘‘ধর্মনিরেপক্ষতাই ভারতীয় সংবিধানের মূল চরিত্র। কিন্তু এটা স্পষ্ট যে, নয়া আইন সেই চরিত্রকে ভঙ্গ করেছে। তাই কেন্দ্র সরকারকে আবেদন করা হচ্ছে যে, ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন করে নাগরিকত্ব দেওয়ার এই আইন তুলে নেওয়া হোক এবং সব ধর্মের মানুষকে সমান চোখে দেখা হোক,’’ বলা হয়েছে প্রস্তাবে।
অসম এনআরসি নিয়ে প্রতিবাদ–প্রতিরোধ ছিলই। সিএএ পাশ হওয়ার পর থেকে সেই ক্ষোভ–বিক্ষোভ আরও বেড়েছে। তার সঙ্গে আবার যোগ হয়েছে এনপিআর। অনেকেরই অভিযোগ, এনপিআর আসলে এনআরসির পূর্ব প্রস্তুতি। পঞ্জাব সরকারও তেমনটাই মনে করে। তাই এই প্রস্তাবে সেই বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘‘সমাজের একটি অংশকে বঞ্চিত করতেই এনআরসি চালু করার কথা বলা হয়েছে। এই ধারণা থেকে এনআরসি–কে মুক্ত করতে এনপিআর–এর ফর্ম বা তথ্যগত পরিবর্তন আনার জন্য কেন্দ্রকে আর্জি জানানো হবে।’’
এদিকে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে , দেশে সিএএ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম প্রধান মুখ ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বাম-কংগ্রেসের অনুরোধ সত্ত্বে কেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় সিএএ,এনআরপি-এনআরসি বিরোধী প্রস্তাব পাশ করা হল না ? তাহলে কী কোথাও একটা সেটিং হয়েছে ?