মমতা ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে তার আবারও প্রমান মিলল ঈদের ছুটির ভূয়ো নির্দেশিকাকে ঘিরে
বিশেষ প্রতিবেদনঃ সোস্যাল মিডিয়ায় রাজ্য সরকারের এক আধিকারিকের নির্দেশিকা। তা নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই বাসে-ট্রেনে সর্বত্র আলোচনায় মুখর হয়ে উঠেছিল। এক মুসলিম যুবক বললেন,দিদি বলেই সম্ভব আমাদের ঈদে টানা চারদিন ছুটি। অন্যদিকে রবিবারে সকালে বিশেষ কাজে শিয়ালদহ যাচ্ছিলাম বাসের মধ্যে কয়েকজন ব্যক্তি বলছেন,মুসলমানদের ঈদে চারদিন ছুটি ভাবা যায়! আসল কী কারণ? তা ভেবে উঠার আগেই আমার মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে দেখলাম রাজ্য সরকারের বলে কথিত সেই বির্তকিত সার্কুলার। পড়লাম দেখেই মনে হল বিষয়টি ভূয়ো। সঙ্গে সঙ্গে আমার পরিচিত এক পুলিশ অফিসারের কাছে জানতে চাইলাম সত্যিই এ ধরনের সার্কুলার দিয়েছে কিনা। তিনি বললেন না। এমন কোন সার্কুলার দেওয়া হয়েছে কিনা তার জানা নেই। তবে সম্ভবত এটা ভূয়ো সার্কুলার। তিনি বললেন একটু পরে পুরো বিষয়টি জানাচ্ছি। তারপরেই জানা গেল কলকাতা পুলিশ জানিয়ে দিয়েছে ঈদের ছুটির নাম দিয়ে যে কথিত সরকারি নির্দেশিকা সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তা আসলে ভূয়ো। এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে লালবাজার জানিয়ে দেয়।
কিন্ত বিষয়টি যত সহজ বলে মনে হচ্ছে আসলে তত সহজ নয়। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মুসলমানদের ঈদে ৪দিন ছুটি দিয়েছে এই কথাটি যত প্রচার হবে ততই সাম্প্রদায়িক মেরুকরুণ সম্ভব হবে। আর রাজ্যের সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের কাছে আলাদা বার্তা দেওয়া যাবে। এর বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার করা যেমন প্রয়োজন একইভাবে প্রশাসনকে কড়া হাতে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক প্রচার বন্ধ করতে উদ্যোগী হতে হবে। ঈদের ছুটি নিয়ে সরকারের বলে কথিত ভূয়ো নির্দেশিকাকে যদি উদ্দেশ্যপ্রনোদিত হয়ে প্রচার করা হয়ে থাকে তা হলে নিঃসন্দেহে তা অপরাধ। আর সরকারের সার্কুলারকে যদি এভাবে প্রচার করতে পারে তাহলে অভিসন্ধি করে অন্য যেকোন বিষয় প্রচার করে রাজ্যের সম্প্রীতিকে বিপন্ন করতে পারে ওই প্রচারকরা।
আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে এক বিশেষ গোষ্ঠী চেষ্টা করছে এ রাজ্যে সাম্প্রদায়িক মেরুকরুণ সৃষ্টি করতে। সেই উদ্দেশ্য নিয়ে ঈদের ছুটির বিষয়টি নিয়ে মিথ্যা প্রচার করা হয়েছে। সোস্যাল মিডিয়ায় যেকোন বিষয় এমনভাবে তুলে ধরে হচ্ছে মনে হচ্ছে যেন সত্যিই এটা ঘটেছে। আর দুঃখের হলেও সত্য শাসক তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা সোস্যাল মিডিয়ার মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার চালাতে পারছে না। বা তাদের সেই সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। আসলে তৃণমূল দলে বেশিরভাগ নেতা নিজ স্বার্থে দলটা করেন। তাই এ ধরনের প্রচারে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে মমতা সরকার সম্পর্কে ভুল ধারনা তৈরি হচ্ছে। এর মোকাবিলা করতে হলে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি,শাসক দলকে পাল্টা প্রচার করতে হবে। এখন থেকে এ বিষয়ে সর্তক না হলে সোস্যাল মিডিয়াকে কাজে লাগিয়ে একটি গোষ্ঠী সম্প্রীতি ভাঙার কাজটা করে যাবে নিরবেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিজে উদ্যোগী হয়ে এই ধরনের মিথ্যা প্রচারের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার করতে হবে। তা না হলে একদিন বাঙালির গর্বের সব কিছুই মাঠে মারা যাবে।