দেশ 

‘‘দেশের মূল সমস্যা ৩৭০ ধারা , সিএএ ও রাম মন্দির ইস্যুতে ১৩০ কোটি ভারতবাসী আস্থার সঙ্গে সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছেন’’ দাবি মোদীর ; আর্থিক অবস্থা শিল্পে মন্দা, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, আকাশছোঁয়া পেঁয়াজের দাম— এ সব কি তাহলে কোনও সমস্যাই নয়? প্রশ্ন নাগরিক সমাজের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : ‘‘৩৭০ অনুচ্ছেদ রদ, রাম মন্দির ইস্যু শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আর পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান থেকে আসা শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথও পরিষ্কার। ১৩০ কোটি ভারতবাসী আস্থার সঙ্গে সমস্যার সমাধান খুঁজে পেয়েছেন।’’ এই ভাবে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পর মোদী দেশের সব সমস্যার সমাধান করে ফেলেছেন বলে দাবি করলেন আজ বুধবার উত্তরপ্রদেশের লখনউ-এ এক সরকারি অনুষ্ঠানে । ৩৭০ ধারা , রাম মন্দির , সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এগুলিই নাকি গভীর সমস্যা ছিল দেশের মোদীর মতে । বেহাল আর্থিক অবস্থা শিল্পে মন্দা, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি, আকাশছোঁয়া পেঁয়াজের দাম— এ সব কি তাহলে কোনও সমস্যাই নয়? এই প্রশ্ন তুলছেন দেশের নাগরিক সমাজ ।

কয়েক দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী রামলীলা ময়দান থেকে বির্তক এড়ানো চেষ্টা করেছিলেন । কিন্ত আজ আবার সেই বির্তককে তিনিই উস্কে দিলেন । দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেই জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বাতিল করেছেন মোদী , অমুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য আইন সংশোধন করেছেন , সুপ্রিম কোর্ট বাবরি মসজিদের জায়গায় রাম মন্দির নির্মাণের অনুমতি দিয়েছে । সরকার নিজে থেকে দুটি কাজ করেছে আর সুপ্রিম কোর্টের রায়ে রাম মন্দির নির্মাণের পথ তৈরি হয়েছে । এই তিনটি ছিল দেশের জাতীয় সমস্যা তা মোদী সরকার মেটাতে সক্ষম হয়েছে বলে দাবি করছে ।

Advertisement

কিন্ত নাগরিকত্ব সংশোধিত আইন তৈরি হওয়ার পর থেকে দেশজুড়ে গণআন্দোলন শুরু হয়েছে । সেই আন্দোলনে সাধারন মানুষ যোগ দিয়েছে । কোনো রাজনৈতিক দল এখনও আন্দোলনে নামেনি । তা সত্ত্বে আন্দোলন গণমুখী হয়ে উঠেছে । রাষ্ট্রপতির সমাবর্তন অনুষ্ঠান বয়কট করেছে ছাত্ররা ।পুলিশ-জনতা সংঘর্ষে একাধিক রাজ্যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির পাশাপাশি অনেকের প্রাণহানি হয়েছে। কমপক্ষে ২০ জন মানুষ মারা গেছে । তবু এটাও নিজেদের সাফল্যের তালিকায় উপরের দিকেই রাখছেন মোদী-অমিত শাহরা। তাহলে এনআরসি নিয়ে যেকথা বলছিলেন মোদী অমিত শাহ তা সঠিক নয় বলেই সাধারন মানুষের সন্দেহ আরও দৃঢ় হল ।

বিরোধীরা অবশ্য বরাবরই অভিযোগ করেন, মোদী-২ সরকার ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’-এর স্লোগান দিলেও আদপে সেই ‘বিকাশ’-এর দেখা নেই। অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, বেসরকারিকরণ, শিল্পে ভাটার মতো গুরুতর সমস্যা থেকে নজর ঘোরাতে কখনও মেরুকরণ, কখনও পাকিস্তান, কখনও বা জাতীয়তাবাদের হাওয়া তুলে সব ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

সিএএ-এনআরসি বিক্ষোভে সারা দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উত্তাল হয়েছে লখনউ। গোটা উত্তরপ্রদেশে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। বুধবার সেই লখনউয়ে দাঁড়িয়েই প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা ভাঙচুর করেছেন, তাঁদের আত্মসমীক্ষা করা উচিত। বিবেকের কাছে প্রশ্ন করা উচিত, যেটা করেছেন, সেটা কি ঠিক করেছেন?’’

একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশের জনতাকে নীতি শিক্ষার পাঠও মোদী দিয়েছেন । তিনি এদিন বলেন, ‘‘ভাল রাস্তা, পরিবহণ, নিকাশি ব্যবস্থা আমাদের অধিকার। কিন্তু সেগুলি রক্ষা করাও আমাদের কর্তব্য। উন্নতমানের শিক্ষা যেমন আমাদের অধিকার, তেমনই সেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সুরক্ষা ও শিক্ষকদের শ্রদ্ধা করাও আমাদের কর্তব্য। সুরক্ষিত পরিবেশ আমাদের অধিকার, পুলিশের কাজকেও সম্মান করা উচিত।’’

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

11 + seven =