কলকাতা 

‘‘রাজ্য সরকার আমার এমন একটা কাজ দেখিয়ে দিক, যেটা অসাংবিধানিক। সংবিধান রক্ষা করার জন্য যা যা করার দরকার আমি তা করব।’’ : জগদীপ ধনকড়

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় এখন রাজ্য সরকারের অবহেলার পাত্র হয়ে উঠেছে বললে খুব একটা ভুল বলা হয় না । বরং সেটাই বাস্তব । গতকাল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আচার্য কার্যত একা হয়ে যান । বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কর্তা তাঁকে স্বাগত জানাতে হাজির ছিলেন না । আর আজ, বৃহস্পতিবার তিনি ঘোষনা করেছিলেন বিধানসভায় যাবেন। কিন্তু এ দিনও একই পরিস্থিতির মুখে পড়লেন তিনি। প্রথমে বিধানসভার বন্ধ গেটের সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হল তাঁকে। তার পর ভিতরে ঢুকতে পারলেন। কিন্তু স্পিকার বা সরকার পক্ষের কারও দেখাই পেলেন না। প্রায় সওয়া এক ঘণ্টা বিধানসভায় কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ধনকড় বললেন, ‘‘আমার হৃদয় রক্তাক্ত হয়েছে।’’ তবে তিনি যে থামবেন না, সে কথাও জানিয়ে গেলেন।

এ দিন সওয়া এক ঘণ্টার মতো বিধানসভায় ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তাই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সেই ক্ষোভ চেপে রাখেননি তিনি। বলেন ‘‘আমার হৃদয় আজ রক্তাক্ত হয়েছে।’’  তিনি এই রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান, বিধানসভায় যে যাবেন, তা আগেই জানিয়েছিলেন, তা-ও বিধানসভার গেট প্রথমে বন্ধ পেলেন, পরে ভিতরে ঢুকেও স্পিকারকে বা সরকার পক্ষের কাউকে পেলেন না— এই ঘটনাকে অসৌজন্য হিসেবেই যে তিনি দেখছেন, তা এ দিন তিনি খোলাখুলি জানান। বিস্ময় নিয়ে ধনকড় এ দিন বলেন, ‘‘রাজ্যপাল বিধানসভায় যদি যেতে চান, তা হলে কর্মদিবস না হলেও বিধানসভা খোলা রাখতে হয়। সেখানে আজকের দিনটা কর্মদিবস হওয়া সত্ত্বেও বিধানসভা বন্ধ রাখা হল!’’

তবে বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নান অবশ্য এ দিন সৌজন্য রক্ষা করেছেন। কিছুটা দেরিতে হলেও বিধানসভায় পৌঁছে এ দিন রাজ্যপালের সঙ্গে তিনি দেখা করেন। রাজ্যপাল বিধানসভায় আসছেন জেনেই যে তিনি এসেছেন, তা-ও জানান মান্নান। দু’জনের মধ্যে করমর্দন হয়। কিছুক্ষণ সৌজন্যমূলক কথাবার্তাও হয়। পরে সংবাদমাধ্যমকে মান্নান বলেন, ‘‘আমি রাজ্যপালেরও সমালোচনা করব না, রাজ্য সরকারেরও সমালোচনা করব না। কিন্তু এ দিন যা হল, তা ভাল হল না।’’

Advertisement

শাসক তৃণমূল দলের পক্ষ থেকে রাজ্যপালের অতিসক্রিয়তাকে বারবার কটাক্ষ করা হয়েছে । তা নিয়ে রাজ্যপাল বলেন ,  ‘‘রাজ্য সরকার আমার এমন একটা কাজ দেখিয়ে দিক, যেটা অসাংবিধানিক। আচার্য হিসাবে কি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারি না? নাকি রাজ্যপাল হিসাবে আমি বিধানসভায় আসতে পারি না?’’ তিনি এ দিন বলেছেন, ‘‘বার বার বলা হচ্ছে, আমি মনোনীত। কিন্তু, মনে রাখবেন আমাকে রাষ্ট্রপতি এখানে পাঠিয়েছেন। সংবিধান রক্ষা করার জন্য পাঠিয়েছেন। তাই আমি থামব না। দরজায় দরজায় যাব। সংবিধান রক্ষা করার জন্য যা যা করার দরকার আমি তা করব।’’

রাজ্যপালের বিধানসভা সফর নিয়ে  আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা শাসক দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যপালের নাম না করে কটাক্ষের সুরে তিনি বলেন, ‘‘উনি রোজই একই কথা বলছেন। এমন আচরণে মনে হচ্ছে উনি রাজ্য সরকারের বিকল্প হওয়ার চেষ্টা করছেন।’’ বিধানসভায় কর্মীরা কেন ছিল না? এই প্রশ্নের উত্তরে পার্থর জবাব, ‘‘কর্মীরা ওঁর এক্তিয়ারে নয়। এখানে অধ্যক্ষই প্রথম এবং শেষ কথা।’’

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

thirteen + 7 =