২০১৯-র লড়াইয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মোদী বিরোধী জোটের গ্রহণযোগ্য নেত্রী
সেখ ইবাদুল ইসলামঃ সদ্য সমাপ্ত ১০ রাজ্যের ১১টি বিধানসভা কেন্দ্র ও ৪টি লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে বিজেপি ও তার শরীক দলগুলির ভরাডুবি হয়েছে। এমনকী, বিহারের নীতিশ কুমারও বিজেপি-র প্রার্থীকে জেতাতে পারেননি। এই নির্বাচনী সাফল্যের নেপথ্যে রয়েছে একজন মানুষের গভীর চিন্তাভাবনা তিনিই প্রথম দেশের সব বিজেপি বিরোধী দলগুলির কাছে আবেদন করেছিলেন জোটবদ্ধ হয়ে মোদীর বিরুদ্ধে সরব হতে হবে। আর তাতেই হাতে-নাতে ফল পেয়েছে দেশের সব বিরোধীদল। এই নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের বার্তা বাহক হলেন,পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাঙালি রাজনীতিবিদ হিসেবে জ্যোতিবাবু,প্রণব মুখার্জির পর জাতীয় রাজনীতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই মুহুর্তে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নেত্রী। তবে প্রণববাবু জাতীয় কংগ্রেসের নেতা হিসেবে দলের সংকটকালে দলের স্বার্থে সবচেয়ে বেশি কাজ করেছেন। সেক্ষেত্রে দলের স্বার্থ ছাড়া তিনি কোন কাজ করেননি।
তবে জ্যোতিবাবু অন্ধ কংগ্রেস বিরোধিতা করেছিলেন। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে জাতীয় স্তরে জোট গঠনে জ্যোতিবাবুরা সেদিন বিজেপিকে অচ্ছুত মনে করেননি। অটলবিহারী বাজপেয়ী ও লালকৃষ্ণ আদবানীদের সঙ্গে জোট বেধে রাজীব গান্ধীকে দেশের মসনদ থেকে সরাতে তৎপর হয়েছিলেন। জ্যোতিবাবুর সেই আত্মঘাতী রাজনীতি আজ বিজেপির উত্থানের নেপথ্যে দায়ী। কিন্ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও পর্যন্ত তিনি জাতীয় স্বার্থ্বেই মোদী বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে সমর্থ হয়েছেন। বারবার দিল্লি ছুটে গিয়ে কংগ্রেস সহ অন্য আঞ্চলিক দলগুলিকে বোঝানোর দায়িত্ব নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সম্পর্কে আঞ্চলিক দলগুলির একটা ভিন্ন ধারনা রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেসের হয়ে মূল কাজটি নিরবে করে চলেছেন। তিনিই এই মুহুর্তে মোদী বা বিজেপি জোটের মুখ হয়ে উঠেছেন। আর কয়েকমাস পরেই লোকসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে,তার আগেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমগ্র দেশের কাছে নিজেকে মোদীর বিকল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০১৯-এ বাঙালি সন্তান হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে মমতাকে দেখা গেলে বিস্ময়ের কিছু থাকবে না।
