দেশ 

পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সম্পন্ন হলে বিজেপি নেত্রী ও প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী সুষমা স্বরাজের শেষকৃত্য , জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তর থেকে শোকবার্তা ,আবেগে কেঁদে ফেললেন নরেন্দ্র মোদী

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় প্রাক্তন বিদেশ মন্ত্রী ও প্রবীণ বিজেপি নেত্রী সুষমা স্বরাজের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল । গতকাল রাতে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান । এদিন শেষকৃত্য অনুষ্ঠানের আগে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

সুষমা স্বরাজের আকস্মিক প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। আর চিরবিদায়ের সময় যত এগোচ্ছে ততই যেন শোকের চেহারাটা একটু একটু করে বড় হচ্ছে। বুধবার, বেলা ১২টা নাগাদ বাসভবন থেকে সুষমার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিজেপির সদর দফতরে। সেখানে বেশ কিছু ক্ষণ শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য রাখা ছিল দেহ। তার পর, বিকেলে তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় লোদি ঘাটে।

Advertisement

শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এ দিন সকালেই সুষমার বাসভবনে উপস্থিত হন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, লালকৃষ্ণ আডবাণী, মনমোহন সিংহ, সনিয়া গাঁধী এবং রাহুল গাঁধী-সহ বহু শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীরা। মঙ্গলবার রাতে সুষমার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে মোদী টুইট করেন, ‘ভারতীয় রাজনীতির একটা গৌরবময় অধ্যায় শেষ হয়ে গেল।’ এ দিন শ্রদ্ধা জানানোর সময় মোদীকে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে দেখা যায়।

এ দিন অমিত শাহ বলেন, “ওঁর মৃত্যু গোটা দেশের রাজনীতির পক্ষে অপূরণীয় ক্ষতি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে গত পাঁচ বছরে বিদেশমন্ত্রী হিসেবে গোটা বিশ্বে দেশের খ্যাতি বাড়িয়েছেন সুষমা।”

অন্য দিকে, বিজেপি প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আডবাণী বলেন, “সুষমাজির সঙ্গে দীর্ঘ দিন কাজ করেছি। ৮০-র দশকে যখন দলের সভাপতি ছিলাম, সে সময়েই তাঁকে আমার দলে এনেছিলাম। ধীরে ধীরে দলের অন্যতম জনপ্রিয় নেত্রী হয়ে উঠেছিলেন।মহিলাদের রোল মডেল ছিলেন তিনি।”

প্রয়াত নেত্রীকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এ দিন তাঁর বাসভবনে যান বিজেপি নেতা মুক্তার আব্বাস নকভি, উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা, বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী, তামিলনাড়ুর উপমুখ্যমন্ত্রী পনিরসেলভম, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীবাল, উপমুখ্যমন্ত্রী মনীশ সিসৌদিয়া, বিএসপি নেতা রামগোপাল যাদব, তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন। অরবিন্দ কেজরীবাল বলেন, “ভারত এক মহান নেতাকে হারাল। সুষমাজি খুব ভাল মানুষ ছিলেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।”

অন্য দিকে, তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সুষমা স্বরাজের মৃত্যুতে আমি মর্মাহত।তাঁকে ১৯৯০ সাল থেকে জানি। আমাদের মধ্যে মতাদর্শগত পার্থক্য থাকলেও, সংসদে আমরা একসঙ্গে অনেক ভাল সময় কাটিয়েছি।এক জন ভাল মানুষ, রাজনীতিক ছিলেন।”

সুষমার মৃত্যুতে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের নেতারাও শোকপ্রকাশ করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী লোটে শেরিং, ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত রন মালকা, চিফ একজিকিউটিভ অব দ্য ইসলামিক রিপাবলিক অব আফগানিস্তান আবদুল্লা আবদুল্লা।

শোক প্রকাশ করেছেন বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন, অক্ষয় কুমার, রবিনা ট্যান্ডন এবং আশা ভোঁসলে-সহ আরও অনেকেই। অক্ষয় কুমার বলেন, “এক জন প্রাণবন্ত নেতা ছিলেন সুষমা স্বরাজজি। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি।” শোক প্রকাশ করেছেন বিরাট কোহালি, সচিন তেন্ডুলকরও। সচিন বলেন, “নারীশক্তির এক জন আইকন ছিলেন সুষমা স্বরাজ।”

সুষমার মৃত্যুর খবর পেয়েই মঙ্গলবার রাতে এইমস-এ যান রাজনাথ সিংহ, নির্মলা সীতারামন, রবিশঙ্কর প্রসাদ, স্মৃতি ইরানি, হর্ষবর্ধন, প্রকাশ জাভড়েকরের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা। রাতেই সুষমার মরদেহ যন্তরমন্তর রোডের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। সুষমার বাড়িতে যান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। তাঁর স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁদের সান্ত্বনাও দেন তিনি। রামনাথ কোবিন্দ ছাড়াও সেখানে গিয়েছিলেন বহুজন সমাজ পার্টির সুপ্রিমো মায়াবতী, কেরলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী উম্মেন চান্ডি এবং যোগগুরু রামদেব। মায়াবতী বলেন, “সুষমাজির মৃত্যুতে ব্যক্তিগত ভাবে আমি খুব দুঃখ পেয়েছি। তিনি এক জন দক্ষ রাজনীতিক, প্রশাসক এবং ভাল বক্তা ছিলেন। বিরোধীদের সঙ্গেও তাঁর সম্পর্ক ভাল ছিল। এই দুঃসময়ে তাঁর পরিবার যেন লড়াই করার শক্তি পায়, সেই প্রার্থনাই করছি।”

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

three × 5 =