বর্ধমান স্টেশনের নাম পরিবর্তন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের অনুমতি না নিয়ে কীভাবে স্টেশনের নাম পরিবর্তন ?
বাংলার জনরব ডেস্ক : বর্ধমান স্টেশনের নাম বদল নিয়ে নিয়ে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।বর্ধমান রেল স্টেশনকে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের নামে চিহ্নিত করার জন্য কেন্দ্রের তরফে কী ভাবে একতরফা উদ্যোগ চলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
ওই স্টেশনের নাম বদলের চেষ্টা আদৌ চলছে কেন, সেই প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী সোমবার নবান্নে বলেন, ‘‘কোনও স্টেশনের নাম পরিবর্তন করতে গেলে রাজ্য সরকারের মতামত নিতে হয়। নাম পরিবর্তনের ছাড়পত্র দেয় রাজ্যই। এটা (বর্ধমান স্টেশনের নাম বদল) বিজেপির প্রস্তাব। গণতন্ত্রে সরকার চলে সংবিধান মেনে। কোনও রাজনৈতিক দলের ইচ্ছায় নয়।’’
রাজনৈতিক শিবিরের পর্যবেক্ষণ, বিষয়টি রাজনৈতিক মোড় নিচ্ছে। ‘বাংলা’ অনুমোদনের বিষয়টি কেন্দ্র যে–হেতু ঝুলিয়ে রেখেছে, বর্ধমান স্টেশনের নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে মমতাও তাই রাজ্যের ছাড়পত্রের আবশ্যিকতার কথা তুলছেন। কয়েক দিন আগে বর্ধমান স্টেশনের নাম বদল করে বিপ্লবী বটুকেশ্বর দত্তের নামে রাখার পরিকল্পনার কথা জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই। সে–কথা প্রকাশ্যে আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী তো বটেই, এর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন স্থানীয় জৈন সম্প্রদায়ের মানুষজনও।
বর্ধমান জৈন মাইনরিটি কমিউনিটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সম্পাদক রাজ সিংহ ভুতোড়িয়া রবিবার রাতেই রেলমন্ত্রীকে টুইট করে এই বিষয়ে তাঁদের আপত্তির কথা জানান। তাঁর বক্তব্য, বর্ধমানের নামকরণের ইতিহাসের সঙ্গে জৈন ধর্মের ২৪তম তীর্থঙ্কর মহাবীরের নাম জড়িয়ে আছে। প্রায় পাঁচ হাজার বছরের পুরনো সেই ইতিহাস অস্বীকার করে এ ভাবে স্টেশনের নাম আচমকা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত খুবই দুঃখজনক। রেলমন্ত্রী ছাড়াও তাঁরা নিজেদের আপত্তির কথা টুইট করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্থানীয় বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে জানিয়েছেন বলে দাবি ভুতোড়িয়ার। তিনি জানান, ওই অঞ্চলের সামগ্রিক ইতিহাসের থেকে বর্ধমান স্টেশনকে বিচ্ছিন্ন করে দেখা ঠিক নয়। ‘‘এ ভাবে নাম বদলের চেষ্টা মানব না। প্রয়োজনে আমরা রেলের বিরুদ্ধে আদালতে যাব,’’ বলেন ভুতোড়িয়া
বর্ধমান শহরবাসীর বড় অংশ এ ভাবে স্টেশনের নাম বদলের উদ্যোগে খুশি নন। তাঁদের অভিযোগ, বর্ধমান শহরের সঙ্গে আরও অনেক খ্যাতনামা ব্যক্তির নাম জড়িয়ে আছে। তাঁদের পরিবার যদি এমন দাবি তোলে, পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে ঠেকবে?
এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে বিজেপির স্থানীয় সাংসদ অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘সরকারি স্তরে নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনও আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ পূর্ব রেলের কর্তারাও জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে এই বিষয়ে এখনও কোনও নির্দেশিকা আসেনি।