দেশ 

প্রিয়াঙ্কার কাছে হেরে গেলেন যোগী ; কংগ্রেস নেত্রীর জেদের কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ যোগী প্রশাসনের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : সমগ্র দেশ বিজেপির শাসনে । বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদী কংগ্রেস মুক্ত দেশ গড়ার শপথ নিয়েছেন । তাঁর এই শ্লোগানে কিছুটা সাফল্য এসেছে । কংগ্রেস এখন প্রায় আঞ্চলিক দলে পরিণত হয়েছে। তাদের সাংসদ সংখ্যা মাত্র ৫২ । আর বিজেপির রয়েছে ৩০৩ জন সংসদ । এদিকে উত্তরপ্রদেশেও বিজেপির শাসন । সেখানে কংগ্রেসের মাত্র একজন সাংসদ । তা সত্বেও কংগ্রেস সাধারন সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর রাজনৈতিক কৌশলের কাছে হেরে গেলেন বিজেপি দোদন্ডপ্রতাপ নেতা ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ।

গত বুধবার উত্তরপ্রদেশের সোনভদ্র গ্রামে জমি বিবাদকে কেন্দ্র করে দলিত সমাজের দশজনকে গুলি করে মারা হয় । সেই মৃত পরিবারের পাশে দাঁড়াতে এবং সমবেদনা জানানোর জন্য গতকাল শুক্রবার সোনভদ্রে যাওয়ার জন্য কংগ্রেসের এক প্রতিনিধিদলকে নিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রওয়ানা দেন । কিন্ত পথে মির্জাপুরেই প্রিয়াঙ্কাকে আটকে দেয় পুলিশ । পুলিশের সঙ্গে বাক বিতন্ডার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে আটক করে চুনার দূর্গ এলাকার গেষ্ট হাউসে নিয়ে যায় । কিন্ত সেখানে গিয়েই প্রিয়াঙ্কা দাবি করেন সোনভদ্রে তাঁকে যেতে না দিলে তিনি অবস্থান চালিয়ে যাবেন । তাঁর এই অনড় অবস্থানে শেষ পর্যন্ত যোগী প্রশাসনকে বাধ্য করে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া পরিবারের কয়েকজনকে ওই গেষ্ট হাউসেই হাজির করাতে। সেখানেই তিনি সোনভদ্রের নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করলেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন। বার্তা দিলেন তাঁদের পাশে থাকার।

Advertisement

আসলে, মির্জাপুরে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কাকে আটকে দেওয়া, তাঁকে চুনার দুর্গেবন্দিকরে রাখার ঘটনা গত ২৪ ঘণ্টায় দেশজুড়ে বিরোধীদের সমালোচনায় সেই চাপ আরও বাড়িয়েছে। প্রবল সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে যোগী সরকারকে। শেষমেশ সেই বাধা তুলে নেয় রাজ্য প্রশাসন। জানিয়ে দিল, যেখানে খুশি যেতে পারেন প্রিয়ঙ্কা।

শনিবার সকালেই চুনার দুর্গে নিহতদের কয়েকটি পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রিয়ঙ্কা। দিন সকালে নিহতদের পরিবারের সদস্যরা চুনারে আসেন কংগ্রেস নেত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। প্রিয়ঙ্কাকে কাছে পেয়েই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। তাঁদের সান্ত্বনা দিতেও দেখা যায় প্রিয়ঙ্কাকে। কিছু ক্ষণ কথাও বলেন তাঁদের সঙ্গে। দিন সকালেও প্রিয়ঙ্কা ফের চুনার থেকে সোনভদ্রে যাওয়ার উদ্যোগ নেন। তাঁকে ফের আটকানো হয়। তখন চুনারের ভিতরেই প্রতিনিধি দলকে নিয়ে ধর্নায় বসে পড়েন প্রিয়ঙ্কা। তাঁর অভিযোগ, মাত্র দুজনের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়। বাকি ১৫ জনকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। এর পরই তিনি বলেন, “আমার লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। আমি এখনও আটক অবস্থায় রয়েছি। দেখা যাক প্রশাসন কী বলে।” 

যোগী সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, “সোনভদ্রের ঘটনার জন্য রাজ্য সরকারই দায়ী।পাশাপাশি রাজ্য সরকারের কাছে নিহতদের পরিবারের জন্য বেশ কয়েকটি দাবিও তুলে ধরেন প্রিয়ঙ্কা। তিনি বলেন, “নিহতদের পরিবারপিছু ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। জমি নিয়ে গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে যে মামলা রয়েছে তা তুলে নিতে হবে।

শুক্রবার মধ্য রাতে রাজ্য সরকারের এক শীর্ষ আধিকারিক এবং বারাণসী পুলিশের এডিজি চুনার দুর্গে যান। সোনভদ্রে না যাওয়ার জন্য প্রিয়াঙ্কাকে অনুরোধ করেন। ঘণ্টাখানেক তাঁদের সঙ্গে কথাও হয়। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা না করতে দিলে চুনার থেকে এক পা নড়বেন না। রাত সওয়া ১টা নাগাদ রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকরা ফিরে যান।

 পরে প্রিয়ঙ্কা টুইট করে বলেন, ‘উত্তরপ্রদেশ সরকার বারাণসীর এডিজি ব্রজ ভূষণ, কমিশনার দীপক অগ্রবাল এবং মির্জাপুরের ডিআইজিকে আমার কাছে পাঠায়। নিহতদের পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা না করে সোনভদ্র ছাড়ার পরামর্শ দেন তাঁরা। প্রায় এক ঘণ্টা বসেছিলেন ওই আধিকারিকরা।তিনি আরও জানান, ‘কেন আমাকে হেফাজতে নেওয়া হল, তার সুনির্দিষ্ট কোনও কারণ রাজ্য সরকারের পাঠানো আধিকারিকরা দেখাতে পারেননি। শুধু তাই নয়, সংক্রান্ত কোনও নথিও দিতে পারেননি তাঁরা।চুনার দুর্গে রাতের একটি ভিডিয়োও টুইট করেন প্রিয়ঙ্কা।

কংগ্রেস নেত্রীকে আটক না গ্রেফতার করা হয়েছে, নিয়েও যোগী সরকারের সঙ্গে একটা টানাপড়েন চলে। কংগ্রেসের দাবি, প্রিয়াঙ্কাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশ পাল্টা দাবি করেছে, গ্রেফতার নয়, আটক করা হয়েছে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদককে।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

18 − four =