কলকাতা 

ভারত বিকাশ পরিষদের বালিগঞ্জ শাখার উদ্যোগে রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণে আলোচনা সভা

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা:গত ১৩ জুলাই শনিবার সন্ধ্যায় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কলকাতা সাপুইপাড়া ঝিল রোড স্থিত ব্যাঙ্ক-প্লটে উদযাপিত হলো ভারত বিকাশ পরিষদের ৫৬তম স্থাপনা দিবস ও রবীন্দ্র-নজরুল স্মরণে আলোচনা সভা। পরিষদের বালিগঞ্জ শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এদিনের অনুষ্ঠানে পরিষদের উদ্বোধনী সঙ্গীত ‘বন্দেমাতরম’এর পর ভারত মাতা এবং রবীন্দ্র-নজরুল প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করেন শাখা সভাপতি নির্মাল্য ভট্টাচার্য, প্রবীনা সদস্যা গৌরী ভট্টাচার্য ও অবিভাবক সদস্য রমেন্দ্র মোহন দাস।

শাখা সচিব শেখ আব্দুল মান্নানের স্বাগত ভাষণের পর শুরু হয় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্ব ভারত বিকাশ পরিষদের ৫৬তম স্থাপনা দিবসের তাৎপর্য মূল্যায়ণ। স্থাপনা দিবসের বিস্তারিত মূল্যায়ন উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের সামনে তুলে ধরেন শাখা সভাপতি তথা বিশিষ্ট সমাজ সেবক নির্মাল্য ভট্টাচার্য। এরপর মানব কল্যাণে ভারত বিকাশ পরিষদের সামগ্রিক অবদান সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করেন বালিগঞ্জ শাখার সদস্য তথা পরিষদের কেন্দ্রীয় সচিব ডা: ঋতা ভট্টাচার্য।

Advertisement

এদিন নির্ধারিত কার্যসূচির মধ্যে গানে কবিতায়, কথায়, নৃত্যে ও যন্ত্র-সঙ্গীতে সাজানো ছিল দ্বিতীয় পর্বের রবীন্দ্র-নজরুল শ্রদ্ধা নিবেদন। প্রথমে রবীন্দ্রনাথের বেদান্ত ভাবনা নিয়ে আলোকপাত করেন ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটি কলকাতার সাধারণ সম্পাদিকা সন্ন্যাসিনী তেজোময়ী মা। ‍তিনি রবীন্দ্র ভাবধারার বিভিন্ন দিকে কীভাবে বৈদান্তিক প্রভাব কাজ করেছে তা নিয়ে আলেচনা করেন । তিনি বলেন , আমরা সকলেই একা । আমাদের সংসারে বাবা-মা, স্বামী-স্ত্রী , ছেলেমেয়েরা আছেন ঠিকই কিন্ত একটা সময় আমরা সবাই একা হয়ে যায় । ঈশ্বর আমরা ডাকি কিছু পাওয়ার আশায় । কিন্ত ঈশ্বর ভালবেসে ডাকি কজন ? তেজোময়ী মায়ের বক্তব্য আধ্যাত্মিকতার দিক ফুটে ওঠে ।

এরপর একই বিষয় ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল বেদান্ত সোসাইটি, অঞ্জলি আশ্রম নেদারল্যান্ডের সন্যাসিনী এঞ্জেলিকা বার্ণস। বিদেশিনী হলেও তার প্রাঞ্জল ইংরেজি ভাষণ ঋদ্ধ করে সবাইকে। আজকের দিনেও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাবাদর্শ কত প্রাসঙ্গিক এ সম্পর্কে যুক্তিগ্রাহ্য মূল্যবান বক্তব্যে উপস্থিত শ্রোতাদের আপ্লুত করেন বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা, সমাজ সচেতন তথা কলামিস্ট সেখানে ইবাদুল ইসলাম। উপরোক্ত আলোচনার সভার শুরুতে স্বরস্বতী বন্দনা পরিবেশন করেন বিশিষ্ট শিল্পী, কবি ও অধ্যাপিকা ডা: মনীষা চক্রবর্তী।

এদিন রবীন্দ্র সঙ্গীত-নৃত্য এবং নির্বাচিত নজরুল গীতির অনুষ্ঠানটি ছিল উপভোগ্য। সুমিষ্ট কন্ঠে একগুচ্ছ রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করে শ্রোতাদের তৃপ্ত করেন শিল্পী চৈতালী মুখার্জী, সৃজিতা সান্যাল ও অর্পিতা বিশ্বাস। একমাত্র আমন্ত্রিত শিল্পী তপতী গোস্বামীর পরিবেশিত একখানি নজরুল ও একখানি রবীন্দ্র সঙ্গীত শ্রোতাদের মুগ্ধ করে দেয়। প্রতিষ্ঠিত বাশরি বাদক অয়ন মুখার্জী এবং তার সহযোগী খ্যাতনামা ভায়োলিন শিল্পী শুভদিন চক্রবর্তীর দ্বৈত পরিবেশনায় রবীন্দ্র যন্ত্র-সঙ্গীতের অনুষ্ঠানটি শ্রোতাদের মন্ত্রমুগ্ধ করে দেয়।

অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র সঙ্গীতের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করে শ্রোতাদের মন কেড়ে নেয় উদীয়মান কিশোরী শ্রীমতী মিস্ত্রি এবং কলকাতা শহরের প্রতিশ্রুতি বদ্ধ নৃত্য শিল্পী অপরূপা মুখার্জী। বিভিন্ন ভাবে যাদের আন্তরিক সহযোগিতায় এদিনের সমগ্র অনুষ্ঠানটি স্মরণীয় হয়ে ওঠে তারা হলেন সুবিমল কুণ্ডু, বুদ্ধদেব বিশ্বাস, নিলীমা চক্রবর্তী, মহুলিমা চক্রবর্তী ও শৈবালিনী চন্দ। এদিন নান্দনিক অনুষ্ঠানের পরিসমাপ্তি হয় শিল্পী মনীষা চক্রবর্তীর পরিবেশিত নজরুল সঙ্গতের সুধায়।

সমগ্র অনুষ্ঠান সুচারুরূপে সঞ্চালনা করেন শাখা সচিব শেখ আব্দুল মান্নান।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

1 + 16 =