কলকাতা 

স্কুল সার্ভিস কমিশনের আজব কান্ড প্রধান শিক্ষক রয়েছেন এমন বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ ; দায় স্বীকার না করে প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থীকেই দায়ী করার অভিযোগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় শিক্ষামন্ত্রী হওয়ার পর শিক্ষা ব্যবস্থা যে লাঠে উঠেছে তা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই । এমনকি তৃণমূল অন্দরে অনেক সাংসদ বিধায়ককে এ টিপ্পনি কাটতে দেখা যায় । কেন এমন হয় ? স্কুলে যেপদে শিক্ষক কর্মরত সেই পদেই শিক্ষক পাঠানো হয়েছে তা জেরে কয়েক মাসের জন্য নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত হয়ে যায় । তার মনে এই যে স্কুল শিক্ষা দফতর যে তালিকা সার্ভিস কমিশনে পাঠাচ্ছে তা সঙ্গে সংগতি নেই । স্কুল শিক্ষা দফতর নিজেদের ইচ্ছামত তালিকা পাঠাচ্ছে ।

অবশ্য অনেক সময় ভুল হয়ে যায় । কিন্ত সেই ভুল থেকে শিক্ষাও নিতে হয় । কিন্ত রাজ্যের স্কুল সার্ভিস কমিশন শিক্ষা নিতে চায় না। ফলে সংকট লেগেই থাকে । যেমন এবার প্রধান শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একই অভিযোগ এসেছে । ডিজিটাল আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী এবারের প্রধান শিক্ষক নিয়োগেও দেখা যাচ্ছে যেখানে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন সেই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাঠানো হয়েছে । এই ঘটনায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ প্রধান শিক্ষকের পদে আবেদনকারীরা। কাউন্সেলিংয়ের পর তাঁরা জানতে পারেন, যে স্কুলে তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, সেখান আগে থেকেই প্রধান শিক্ষক রয়েছেন!

Advertisement

অভিযোগ উঠেছে, এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় বাসন্তী সেন্ট জেভিয়ার্স হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক নন্দীশ নিয়োগীকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি দিয়েছেন কমিশনের চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার। এই বিভ্রান্তি নিয়ে ফেসবুকে সরব হয়েছিলেন নন্দীশবাবু। প্রধান শিক্ষক পদে কাউন্সেলিংয়ে সফল হওয়ার পর তাঁকে নেগুনা সুন্দর নারায়ণ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে সুপারিশ করে এসএসসি। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তিনি ওই স্কুলের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে জানতে পারেন, সেখানে গত কয়েক বছর ধরে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন।

বিষয়টি জানার পর নন্দীশবাবু স্কুল সার্ভিস কমিশনে বিষয়টি জানাতে যান। ঘটনাচক্রে ওই দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানও। নন্দীশবাবুর অভিযোগ, তাঁকে যে শুধু অসম্মান করা হয় তাই নয়, তাঁকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে বলে মন্তব্য করা হয়, আপনার প্রধান শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা নেই!

এর পরেই বিষয়টি তিনি ফেসবুকে তুলে ধরেন। নন্দীশবাবুর অভিযোগ, তার পরেই খোদ সৌমিত্র সরকার তাঁকে ফোন করে হুমকি দেন। তাঁকে চাপ দিয়ে বলা হয়, ‘আপনি ফেসবুকে চেয়ারম্যানের নামে লিখতে পারেন না। ওই পোস্ট মুছে ফেলে লিখুন, ভুল হয়ে গিয়েছে। আপনি গোখরো সাপের লেজে পা দিয়েছেন। আমি এ বার কী করি দেখবেন!’

নন্দীশবাবুর মতোই মুর্শিদাবাদ জেলার এক শিক্ষিকাও (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) একই অভিযোগ এনেছেন। যে স্কুলে প্রধান শিক্ষক রয়েছেন, তাঁকে সেখানেই নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে। নন্দীশবাবু বা ওই শিক্ষিকাই শুধু নন, তাঁদের মতো আরও কয়েক জন একই ঘটনার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ।

এসএসসি-র চেয়ারম্যান সৌমিত্র সরকার বলেন, “এতে আমাদের কোনও দোষ নেই। স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে যেমন তালিকা এসেছে, তার ভিত্তিতেই কাউন্সেলিং হয়েছে।” তবে তাঁর বিরুদ্ধে তোলা নন্দীশবাবুর অভিযোগ অস্বীকার করেন সৌমিত্রবাবু।

নন্দীশবাবুর অভিযোগ, “ভুল তো আমরা করিনি। যাঁরা এই তালিকা তৈরি করছেন, তাঁদের খেয়াল রাখা উচিত। আমাদের সামনে প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে, এমন স্কুলের তালিকাই দেওয়া হয়েছিল। কাউন্সেলিংয়ের সময় আমরা তাই বেছে নিয়েছি।”

ওয়াকিবহাল মহল দাবি করছে, এই ভুল তো শিক্ষা দফতরের তাই শিক্ষা দফতরকেই দায়িত্ব নিতে হবে । প্রশ্ন উঠেছে শিক্ষা দফতরের ভুলের জন্য কোনো প্রধান শিক্ষক পদপ্রার্থীকে কী অপমান করার অধিকার রয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যানের । নৈতিক দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়ে চেয়ারম্যানের পদত্যাগ করা উচিত । প্রথম ভুল করেছে শিক্ষা দফতর এটা ঠিক কিন্ত তা বলে চেয়ারম্যান দায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য অন্যকে দোষারোপ করতে পারেন কি ?

ঋণ স্বীকার : ডিজিটাল আনন্দবাজার।


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

18 + 10 =