২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনের সময় রাজ্য পুলিশ-ই তার প্যারোল আটকে ছিল তা না হলে তিনি কামারহাটিতে জিততেন সোস্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক উক্তি মদনের
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুলিশের বিরুদ্ধেই এ বার ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। ২০১৬–য় জেলে বন্দি থাকা অবস্থায় ভোটে দাঁড়ালেও তাঁকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়নি। সে কারণেই তিনি হেরে গিয়েছিলেন। আর গোটাটার জন্য দায়ী রাজ্যের পুলিশ। ফেসবুক লাইভে মদনের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে কাটমানি বা টাকা নেওয়ার অভিযোগ নেই। শুধুমাত্র প্রভাবশালী হওয়ার অভিযোগ এনে তাঁকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। ২২ মাস জেলে কাটাতে হয়েছে। রাজ্য পুলিশ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তাঁর সম্পর্কে ভাল রিপোর্ট দেয়নি বলেই এত দিন জেলে কাটাতে হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এমনকি ফেসবুক লাইভ করে মদনের দাবি, কারও ‘দয়া’ বা ‘জনপ্রিয়তা’য় নয়, নিজের জোরেই ভোটে জিততে পারতেন তিনি।
ইদানীং মাঝে মাঝেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ফেসবুক লাইভ করেন মদন। গত শনিবারও তিনি তেমনই একটি লাইভে এসেছিলেন। সেখানে প্যারোলে মুক্তি না পাওয়ার প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেন তৃণমূলের ওই নেতা। ২০১৬–র বিধানসভা নির্বাচনে মদনকে তৃণমূলের টিকিট দেওয়া হয়েছিল কামারহাটি কেন্দ্র থেকে। সারদা–কাণ্ডে গ্রেফতার হয়ে সেই সময় তিনি জেলে বন্দি। জেল থেকেই ভোটে লড়েছিলেন। ফেসবুক লাইভে মদন দাবি করেছেন, “সেই সময় ৪৩ বার প্যারোলের জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু প্রত্যেক বারই তা চেপে দেওয়া হয়েছে। এখন জানতে পারছি রাজ্যের কারা দফতরই ওই কাজ করেছিল। তখন কারামন্ত্রী ছিলেন সফি (হায়দার আজিজ সফি)। প্যারোলের অনুমোদন নিয়ে জাইদি (মুখ্য নির্বাচন কমিশনার নাসিম জাইদি)-র সঙ্গেও কথা বলি। কিন্তু তিনি বলেন, প্যারোল অনুমোদন করা নির্বাচন কমিশনের কাজ নয়। ওটা রাজ্য সরকারের কাজ। অথচ ছত্রধর মাহাতো কিন্তু ভোটে দাঁড়ানোয় প্যারোলে ১৫ দিন মুক্তি পেয়েছিলেন।”
মদন কামারহাটিতে সে বারের ভোটে হেরে গিয়েছিলেন। ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, “কারও দয়া বা জনপ্রিয়তা বিক্রি করে নয়, মদন মিত্র হয়েই জিততাম। কিন্তু ওখানে কিছু চোর–জোচ্চোরের জন্যই আমায় হারতে হয়েছে।” রাজনৈতিক মহলের মতে, ‘কারও দয়া’ বা ‘জনপ্রিয়তা’ বলতে মদন আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথাই বলতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে তিনি নাম করে দলের বেশ কিছু নেতা–মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত প্রসঙ্গে মুখ খোলেন। তাঁর মন্তব্য, “দলের অনেক নেতা আমাকে বলেছেন, আমাদের বিরুদ্ধে সিবিআই ছিল, আমরা হারিনি।’’ মদন বলেন, ‘‘জানি, সৌগত রায়, শুভেন্দু অধিকারী, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, ফিরহাদ হাকিম, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দারদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্ত চলছিল। তাঁরাও নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন। কিন্তু সিবিআইয়ের বোঝা ওঁদের বইতে হয়নি।” ( সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার)