প্রচ্ছদ 

সাংসদ –বিধায়করাও ছাড় পাবেন না কাটমানি খেলে হঁশিয়ারি মমতার , ভোটের ফল খারাপ হওয়ার জন্য নেত্রী রোষের মুখে পড়লেন গৌরি-শংকর –অজয়- অরিন্দম

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

শুক্রবার তৃণমূল ভবনে নদীয়া জেলার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে আর্থিক দুর্নীতি নিয়ে আবার সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিরুদ্ধে কড়া বার্তা দিয়েছেন, সাংগঠনিক রদবদলের নির্দেশও দিয়েছেন। নদিয়ায় ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এক মাসের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছেন তৃণমূল চেয়ারপার্সন।

নদিয়া জেলার দুই লোকসভা আসনের মধ্যে একটা তৃণমূল ধরে রাখতে পেরেছে, একটা হাতছাড়া হয়েছে। কিন্তু যে ব্যবধানে কৃষ্ণনগরে জিতেছেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র তার প্রায় চার গুণ ব্যবধানে রানাঘাটে হেরেছেন দলীয় প্রার্থী রূপালি বিশ্বাস। কৃষ্ণনগরেও তিনটে বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল পিছিয়ে গিয়েছে। এই বিপর্যয়ের কারণ বিশ্লেষণ করতে এবং সমাধান খুঁজতেই শুক্রবারের বৈঠক ডাকা হয়েছিল। জেলার গুরুত্বপূর্ণ নেতা-নেত্রীদের অনেকেই নেত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন সে বৈঠকে।

Advertisement

ভোটের পরে নদিয়ায় রদবদল ঘটিয়ে রানাঘাটের দায়িত্ব শঙ্কর সিংহকে এবং কৃষ্ণনগরের দায়িত্ব মহুয়া মৈত্রকে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ভোট পর্যন্ত জেলা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন গৌরীশঙ্কর দত্ত। জেলায় দলের সামগ্রিক ফল খারাপ হয়েছে তো বটেই, গৌরীশঙ্কর যে এলাকার বিধায়ক, সেই তেহট্টেও পিছিয়ে পড়েছে তৃণমূল। ফলে এ দিনের বৈঠকে গৌরীশঙ্করকে কড়া কথা শুনতে হয়েছে বলে তৃণমূল ভবন সূত্রের খবর।

দলনেত্রীর ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন শান্তিপুরের তরুণ বিধায়ক অরিন্দম ভট্টাচার্য এবং প্রবীণ নেতা তথা শান্তিপুর পুরসভার চেয়ারম্যান অজয় দে-ও। অরিন্দম এবং অজয়ের অনুগামীদের মধ্যে চলতে থাকা নিরন্তর দ্বন্দ্বই শান্তিপুরে দলকে বিপাকে ফেলেছে বলে নেত্রী মনে করছেন। অবিলম্বে ঝগড়া মেটাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দুই নেতাকে। চাকদহেও দলের ফলাফল খুব খারাপ। অথচ লোকসভা ভোটের কিছু আগেই চাকদহের বিধায়ক রত্না ঘোষকে মন্ত্রী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেও চাকদহে বড়সড় হারের মুখ কেন দেখতে হল তৃণমূলকে? প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এ দিন রত্নাকে। বাদ যাননি শঙ্কর সিংহও। ভোটের ফল প্রকাশিত হওয়ার পরেই শঙ্করকে মমতা রানাঘাটের দায়িত্ব দিয়েছেন, সে কথা ঠিক। কিন্তু এ শঙ্করের নিজের বিধানসভা কেন্দ্র রানাঘাট উত্তর-পশ্চিমেও বড় ব্যবধানে পিছিয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তাই শঙ্করকেও এ দিন কথা শুনতে হয়েছে। ‘‘শঙ্করদা, আপনার কাছ থেকে এই ফল আশা করিনি,’’—এমনই বলেছেন নেত্রী, খবর তৃণমূল সূত্রের।

কাটমানি বা আর্থিক দুর্নীতি প্রসঙ্গে এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তা অত্যন্ত কঠোর ছিল বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। আর্থিক দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার এবং দল অত্যন্ত কঠোর নজরদারি চালাবে বলে তিনি এ দিন বার্তা দিয়েছেন নদিয়ার নেতাদের। কারও বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে সরাসরি পুলিশি পদক্ষেপ করা হবে, সাংসদ-বিধায়করাও ছাড় পাবেন না— তৃণমূলনেত্রীর বার্তা এ দিন এই রকম ছিল বলেই খবর। চাকদহ এবং বীরনগর পুরসভাকে মমতা এ দিন বিশেষ ভাবে সতর্ক করেছেন বলেও খবর।

নদিয়া জেলার নেতাদের এ দিন জনসংযোগ বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পা মাটিতে রেখে চলতে হবে— তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এই বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

নদিয়ায় দলের খারাপ ফলাফলের অন্যতম কারণ সাম্প্রদায়িক মেরুকরণ— এমনটাও মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন নেতারা রুখতে পারলেন না সাম্প্রদায়িকতার হাওয়া— নদিয়ার নেতাদের এ দিন এই প্রশ্নের মুখেও দাঁড় করান মমতা। ( সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার)

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

20 + seven =