“এই নির্বাচনটা কোনও নির্বাচনই নয়। হাজার হাজার, কোটি কোটি টাকার চিটিং হয়েছে। এটা ইলেকশন না চিটিংবাজি তা সবাই জানতে পারবে। আমরা আগে বুঝে গিয়েছি, অন্যেরা পরে বুঝবেন” : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
রাজ্যের ৫০% পুরসভায় এবার বিজেপি দল এগিয়ে ছিল । অথচ সব কটি পুরসভায় শাসক দল তৃণমূলের দখলে । কেন এমন হল তা নিয়ে আজ মঙ্গলবার তৃণমূল নেত্রী রাজ্যের সব কটি পুরসভার কাউন্সিলারদের সঙ্গে বৈঠক করেন । কি বললেন দলনেত্রী তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হল : –
- সবাই ভাল থাকবেন আর মনে রাখবেন বাংলার সংস্কৃতি বাংলার সভ্যতা, বাংলার জাগরণ। এখন থেকে জয় হিন্দ বলা অভ্যাস করুন, বলুন জয় হিন্দ, জয় বাংলা। আর একটু রবীন্দ্রনাথকে স্মরণ করে বলবেন, জয় হে, জয় জয় জয় জয় হে।
- এই নির্বাচনটা কোনও নির্বাচনই নয়। হাজার হাজার, কোটি কোটি টাকার চিটিং হয়েছে। এটা ইলেকশন না চিটিংবাজি তা সবাই জানতে পারবে। আমরা আগে বুঝে গিয়েছি, অন্যেরা পরে বুঝবেন।
- সাধারণ মানুষ গালাগাল করলে শুনতে হবে। তাঁদের জন্য কাজ করতে হবে।
- যাঁরা দল ছাড়ার তাড়াতাড়ি ছাড়ুন, চোরেদের আমি দলে রাখব না।
- ডেডিকেটেড বাবা-ছেলেকে টিকিট দিতে হবে। ভুল করে বাবা-ছেলেকে টিকিট দিয়ে দিয়েছি। বুঝতে হবে যাঁরা পার্টি ছেড়ে যাবে না, তাঁদের টিকিট দিতে হবে।
বিকাশ বসুর স্ত্রীকে টিকিট না দিয়ে তাঁর খুনিদের টিকিট দিয়েছি, এটা আমাদের বড় ভুল। এসব ভুল গুলো সংশোধন করতে হবে।
- আমাদের নতুন কর্মী সব জায়গায় তৈরি করে নিয়েছি আমরা। এক জন যাবে আমরা ৫০০ জন তৈরি করব।
- এটা যেন রামধনু পার্টি হয়ে গিয়েছে। কখনও মনে হল বিজেপি করব, কখনও মনে হল সিপিএম করব। এদের রাজনৈতিক কোনও সত্ত্বা আছে? আমি রাজনীতি করি মানুষের জন্য। যে লোকটা মানুষের জন্য কাজ করে, জীবনে হারে না।
- কোথায় কোনও একটা গ্রামসভা চুরি করে পালিয়ে গেল, তাতে আমার বয়েই গেল। আমার কিচ্ছু যায় আসে না। ১৫ থেকে ২০ কাউন্সিলর কোথাও চলে গেলে কিচ্ছু হবে না। আর যে সব বিধায়করা যাওয়ার তাড়াতাড়ি চলে যান।
- ডেঙ্গিটা নিয়ে আপনাদের এখন থেকেই ভাল করে নামতে হবে। বিশেষ করে উত্তর ২৪ পরগণায়। কয়েকটা পকেট আছে যেখানে ডেঙ্গি বেশি হয়। সেখানে এখন থেকেই অ্যাকশনটা নিতে হবে। একটাও খারাপ ঘটনা যেন না ঘটে তার জন্য এখন থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।
- পারফরম্যান্স ভাল হলে, সেটা দেখে এ বার টিকিট দেওয়া হবে কাউন্সিলরদের। নিজের পছন্দমতো লোককে এ বার হাতে হাতে টিকিট দেওয়া হবে।জেলার নেতাদের হাতে আর টিকিট নয়।
- প্রত্যেকে ভোটার তালিকাটা ভাল করে করুন। কারণ আমরা আগেযে ভাবে গুরুত্ব দিয়েভোটার তালিকা করতাম, সে ভাবে তালিকা বানাতে হবে। কারও নাম যেন বাদ না যায়। আমাকে অনেকেই বলেছেন, তাঁর নাম নেই।
- সরকারি সম্পত্তির দাম আছে। এটা ববির ডিপার্টমেন্ট। ববিকে বলব ব্যবস্থা নিতে।
- সরকারের সমস্ত জায়গা সরকারকে ফাঁকি দিয়ে নিজের নামে করে নিয়েছে। পার্ক থেকে পুকুর থেকে শুরু করে সব কোনওটা বাবার নামে, কোনওটা কাকার নামে করে নিয়েছে। এদের ক্ষমা করব না।
- এটা অত সহজ নয়। অন্য দলে চলে গেলেই বেঁচে যাবেন না। আরও ফাঁসবে।
- আজকাল আবার নতুন স্টাইল হয়েছে। চুরি করলেই পালিয়ে যায়, যে-ই চুরি করছে আর ধরা পড়ছে অন্য একটা দলে গিয়ে নাম লেখাচ্ছে।
- এলাকায় যদি ভাল কাজ না হয়, দোষটা দলের উপর পড়ে, ভাল কাজ হলে দলের সুনাম বাড়ে। আমারঅনেক কর্পোরেশন, মিউনিসিপ্যালিটি যত্ন করে কাজ করে, অনেকে খেয়ালই করে না। বাড়ি আর প্রোমোটিং ছাড়া কিছু ভাবে না তারা।
- কাউন্সিলরদের কাছ কিন্তু মানুষের কাজ করা। স্থানীয় উন্নয়ণের টাকা কিন্তু সাংসদ, বিধায়কদের কাছে থাকে না। কাউন্সিলররাই জনগণের কাজ করার জন্য সরাসরি হাতে টাকা পান।
- উপস্থিত সমস্ত কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মেয়র-সহ সমস্ত বন্ধুদের বলছি।আমার এই মিটিংয়ে আসার কথা ছিল না। তাও আপনাদের কাছে আসা। কলকাতা কর্পোরেশনের সমস্ত কাউন্সিলররা এসেছেন তো? দুর্গাপুর মিউনিসিপ্যালিটির কাউন্সিলর আছেন তো? অন্যান্যরা এসেছেন? কী কাজ করতে হবে সব শুনে নিয়েছেন তো?
( সৌজন্যে ডিজিটাল আনন্দবাজার)