কলকাতা 

হুগলীতে ভোটের খারাপ ফলের পর্যালোচনা করতে গিয়ে তপন ও অসীমাকে তোপ মমতার ‘‘তোমাদের জন্যই এই অবস্থা হয়েছে। লজ্জা করে না!’’

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে হুগলী জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের ফল ভাল হয়নি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক উত্থানের কেন্দ্রবিন্দু সিঙ্গুরে হার হয়েছে তৃণমূলের । সমগ্র জেলাতেই অবস্থা খুবই করুণ । তৃণমূল ছেড়ে দলে দলে বিজেপি যোগ দিচ্ছে কর্মীরা । এমনকি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মদতপুষ্ট খানাকুলের তৃণমূলের যুব নেতা নাইমুল হক ওরফে রাঙা মুকুল রায়ের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন । অথচ তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের দয়ায় সব ধরনের অপকর্ম করে স্বমহিমায় বিরাজ করছিল । তাই স্বাভাবিকভাবেই হুগলী জেলার ফলাফল নিয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অস্বস্তিতে । ফলাফল বিশ্লেষণ করার জন্য গতকাল তৃণমূল ভবনে এক বৈঠক হয় । এই বৈঠকে বক্তব্য রাখার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাকি কেঁদে ফেলেছেন সূত্রের খবর ।

এদিনে বৈঠকের শুরুতেই খানাকুলের তৃণমূল নেতা শৈলেন সিনহা অসুস্থ হয়ে পড়েন । এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত ও কার্যকরী সভাপতি অসীমা পাত্রকে তীব্র ভাষায় ভর্ৎসনা করেন । তিনি বলেন ‘‘তোমাদের জন্যই এই অবস্থা হয়েছে। লজ্জা করে না!’’ 

Advertisement

জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তর ক্ষমতা আরও কাটছাঁট করে সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তিন কার্যকরী সভাপতি  দিলীপ যাদব, অসীমা পাত্র প্রবীর ঘোষালকে। এদিন দিলীপবাবুকে গোটা জেলাই দেখতে বলেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর সঙ্গে থাকবেন বাকি দুজন। জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কেসতর্ক করে মমতা বলেন, ‘‘তুমি যে দায়িত্বে আছ সেটাই ঠিক করে কর। সব জায়গায় মাথা ঘামাতে যাবে না।’’

দলীয় সহকর্মীদের উদ্দেশে মমতার প্রশ্ন, ‘‘তোমরা কী পাওনি? এমএলএ, এমপি, পুরসভা, পঞ্চায়েত সব পেয়েছ। তারপরেও কাজ কর না। মানুষের কাছে যাও না। ঠিক মতো সাহায্য পৌঁছয় না। তার জন্য দলের নির্বাচনী খারাপ হয়েছে। এরপর তোমরা কী আশা কর?’’

সিঙ্গুরে দলের হারকে তিনি দিন দলেরলজ্জাবলেও চিহ্নিত করেন।  

সিঙ্গুরে কে বড় নেতাবেচারাম না মাস্টারমশাই?’ দিনের বৈঠকে এক সময় বলে ওঠেন দলনেত্রী। তিনি বলেন, ‘‘আমি সিঙ্গুরের জন্য কী করিনি? আর আপনারা নিজেরা লড়াই করে সিঙ্গুরে দলটাকে হারিয়ে দিলেন?’’ ওই বৈঠকে উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শী এক নেত্রী বলেন, ‘‘দিদি বলতে গিয়ে দিন কার্যত কেঁদে ফেলেছেন। এক সময় দিদি বলেন, ‘‘যখন থাকব না। তখন তোমরা বুঝবে।

বেচারাম মান্না এদিন বলেন,‘‘এখন সিঙ্গুরে আমার বিরুদ্ধ গোষ্ঠী এমনভাবে কাজ  করছে যে, দলের ক্ষতির কথা তাঁরা চিন্তা করছেন না। আমি যেহেতু সিঙ্গুরে লোকসভা নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলাম দলের তরফে, তাই দল সেখানে দুহাজার ভোটে জিতলেও বেচার ভাল হবে মনে করেছেন তাঁরা। তাই দল নয়, সিঙ্গুরে বেচাকে হারানোই ছিল মূল কথা। এইভাবে ভোট হয়!’’’’

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে কলকাতার কাছের গুরুত্বপূর্ণ জেলা হুগলিতে মমতা শুক্রবার ঝুঁকি নিতে চাননি। এদিন জেলায় খারাপ ফলের জন্য তপন দাশগুপ্ত, অসীমা পাত্রকে বকাবকি করেছেন। কিন্তু আগামী দিনে হুগলিতে দলের রাশ যে উত্তরপাড়া পুরসভার পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের হাতেই থাকবে, তা তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন। দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সীও তাতে সায় দেন। দিলীপ বর্তমানে দলের খাতায় কমলে কার্যকরী সভাপতি। কিন্তু উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল, ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র এবং দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্তের সঙ্গে গোষ্ঠী বিন্যাসের রাজনীতিতে তেমন বনিবনা ছিল না। তাই তিনি জেলার বৈঠক এড়িয়ে চলতেন। চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদারের উপরও যে রাজ্য নেতৃত্ব খুশি নয়, তাও দলনেত্রী এদিন স্পষ্ট করে দিয়েছেন।

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

15 + 3 =