দেশ 

আড়াই বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে খুন করার প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে সমগ্র ভারতবর্ষ , রাহুল-প্রিয়াঙ্কা-অভিষেক বচ্চন সহ নিন্দার ঝড় বুদ্ধিজীবী মহলে , চাপে পড়ে কড়া পদক্ষেপ যোগী প্রশাসনের

শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : গত রবিবার আড়াই বছরের এক শিশু কন্যাকে নৃশংসভাবে খুন করার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বইছে । যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যের আলিগড়ের এই ঘটনার খবর সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় প্রচন্ড অস্বস্তিতে উত্তরপ্রদেশ সরকার ।

রাজনৈতিক নেতা থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টরা এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন টুইটার-ফেসবুকে। অন্য দিকে গাফিলতির অভিযোগে পাঁচ পুলিশ কর্মী-অফিসারকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে জাতীয় নিরাপত্তা আইনে তদন্ত করে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ।

Advertisement

গত রবিবার আলিগড়ের তপ্পল এলাকায় একটি চাষের জমিতে কুকুরের আনাগোনা এবং দুর্গন্ধ পেয়ে পুলিশে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ গিয়ে আড়াই বছরের ওই শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে। তার পর থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা এলাকা। তিন চার দিন আগে নিখোঁজ ডায়েরি করা হলেও পুলিশ সেটিকে কার্যত গুরুত্বই দেয়নি বলে অভিযোগ। দোষীদের শাস্তির দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিবাদ-অবরোধ-বিক্ষোভ করছেন বাসিন্দারা।

একই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়াতেও নিন্দার ঝড়। টুইটারে ওই শিশুর নামে একটি হ্যাশটাগ চালু হতেই দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসতে শুরু করেছে নানা মহল থেকে। গত ২৪ ঘণ্টায় রিটুইট, কমেন্ট পড়েছে প্রায় ১৭  হাজার। বর্বরোচিত ও নৃশংস হত্যার ঘটনায় দোষীদের কঠোরতম শাস্তির পক্ষে সওয়াল করেছেন অধিকাংশ টুইটার ব্যবহারকারী।

সোস্যাল মিডিয়ায় শুধুমাত্র রাজনীতিবিদরা সরব হয়েছেন তাই নয় , একইসঙ্গে সরব হয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা । এমনকি  কিংবদন্তী অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের পুত্র অভিষেক বচ্চন আড়াই বছরের শিশু কন্যার নৃশংস খুনকে বর্বরোচিত ঘটনা বলে উল্লেখ্য করে টুইটে লিখেছেন ,  ‘‘বিরক্ত ও বাকরুদ্ধ। এক জন মানুষ কী ভাবে এই নারকীয় কাণ্ড ঘটাতে পারে? বাকরুদ্ধ।’

এদিকে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এই ঘটনার নিন্দা করে টুইটারে লিখেছেন , ‘‘আলিগড়ের ছোট্ট শিশুকে বর্বরোচিত খুনের ঘটনায় আমি মর্মাহত। এক রত্তি শিশুর সঙ্গে কেউ এই রকম নৃশংস আচরণ করতে পারে? এই ভয়ঙ্কর খুনের ঘটনায় দোষীদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। দ্রুত অপরাধীদের বিচারের ব্যবস্থা করা উচিত পুলিশের।’’  এই ঘটনাকে ‘অবর্ণনীয়’ ও ‘পাশবিক’ আখ্যা দিয়ে প্রিয়ঙ্কার টুইট, ওই শিশুর বাবা-মার যন্ত্রণা কল্পনাও করতে পারছি ।

প্রায় একই রকম প্রতিক্রিয়া শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদীর। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনিও। নিখোঁজ ডায়েরির পর তদন্তে গুরুত্ব না দেওয়ার অভিযোগ উঠলেও খুনের ঘটনা সামনে আসার পর সক্রিয় হয়েছে পুলিশও। পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, খুনের আগে ধর্ষণ এবং চোখ খুবলে নেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসার পর আলিগড় পুলিশের দাবি, ধর্ষণের প্রমাণ মেলেনি। চোখ তুলে নেওয়ার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিয়েছেন পুলিশকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, যেহেতু দেহটি পচে গলে গিয়েছিল, তাই মনে হয়েছে চোখ উপড়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তবে একটি হাত এবং একটি পা যে দুমড়ে-মুচড়ে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল, ময়নাতদন্তে সেটা স্পষ্ট।

ঘটনার গুরুত্ব বুঝে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে খুনের পাশাপাশি ন্যাশনাল সিকিওরিটি অ্যাক্ট (এনএসএ) বা জাতীয় সুরক্ষা আইনের ধারাও মামলায় যুক্ত করেছে পুলিশ। এই আইনে অভিযুক্তদের এক বছর পর্যন্ত হাজতে রাখা যায়। অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে যে সময়সীমা ৯০ দিন। আলিগড়ের বরিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিক আকাশ কুলহরি বলেন, এনএসএ ধারার পাশাপাশি ফাস্ট ট্র্যাক আদালতে বিচারের জন্যও দ্রুত তদন্ত প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

উল্লেখ্য মাত্র কয়েক হাজার টাকার জন্য আড়াই বছরের শিশু কন্যাটিকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ । এই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পরেই দেশজুড়ে শোরগোল পড়ে যায় । রাজনৈতিক দল নির্বিশেষে বুদ্ধিজীবীদের প্রতিবাদের ফলে নড়েচড়ে বসে উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন ।

 

 

 

 


শেয়ার করুন
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

four × one =