প্রচ্ছদ 

কর্ণাটক বিধানসভা নির্বাচনে ৬৬ টি কেন্দ্রে মুসলিমরাই নির্ণায়ক শক্তি

শেয়ার করুন
  • 47
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বিশেষ প্রতিবেদনঃ  ২২৪ টি আসন বিশিষ্ট কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন হচ্ছে সামনের শনিবার। এবার বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা কারা পাবে তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। বিজেপি সর্বশক্তি দিয়ে কংগ্রেস শাসিত এই রাজ্যটি দখল করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, কংগ্রেসও মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে জিতিয়ে ফের সরকারে আসতে মরিয়া। এবার নির্বাচন যুদ্ধের এই টানাপোড়েনে মুসলিমরা কি অবস্থান নেবে তা খুুুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ রাজ্যের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রে মুসলিমরা যেমন সংখ্যাগরিষ্ঠ, তেমনি মোট ৬৬ টি কেন্দ্রে জয় পরাজয়ের শক্তি নির্ধারক মুুুুসলিমরাই। যে সাতটি কেন্দ্রে মুসলিমদের সংখ্যা ৫০ শতাংশ বা তার বেশি সেই কেন্দ্রগুলো হলো ম্যাঙ্গালুরু, কলাবুরাজি (উত্তর), বিজয়নগর, নরসিংহ রাজা (মহিশূর), সর্বজ্ঞাননগর, চামারাজপেট ও  পুলকেশী নগর। গতবার বিধানসভা নির্বাচনে এগুলির মধ্যে প্রথম পাঁচটিতে জিতেছিল কংগ্রেস। বাকিগুলিতে জিতেছিল জেডি (এস)। ২০১৩ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ১১ জন মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছিল। কর্ণাটকের ইতিহাসে সবথেকে বেশি মুসলিম বিধায়ক হয়েছিলেন ১৯৭৮ সালে। সেবার ১৭ জন মুসলিম বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিজেপি নেতা প্রাক্তন পুলিশ অফিসার আব্দুল আজিম যদিও  বিভিন্ন মুসলিম এলাকায় প্রচার করে দলের সরকার প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু রাজ্যের মুসলিমরা কোনও মতেই বিজেপির পক্ষে যেতে নারাজ। কর্ণাটকের মোট জনসংখ্যার মধ্যে ১২ শতাংশ মুসলিম। কংগ্রেস নেতা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এআর রহমান খান দাবি করেছেন, এবার পরিস্থিতি চাপের। রাজ্যের মুসলিমরা বিজেপিকে পরিত্যাগ করে কংগ্রেসকে ভোট দেবে। কারণ মুসলিমদের মধ্যে সর্বস্তরের ভীতি এবং বিচ্ছিন্নতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। গোরক্ষকদের তথাকথিত উপদ্রব, নীতি পুলিশের দাপাদাপি এবং লাভ জিহাদের ঘটনা এখানকার মুসলিমদের শঙ্কিত করে রেখেছে। মুসলিমরা মনে করছে জেডিএস, এসডিপিঅাই, এবং নামকরা শিল্পপতি নওহেরা শেখের অল ইন্ডিয়া মহিলা এমপাওয়াররমেন্ট পার্টির মতো শক্তিকে ভোট দিলে তারা নির্বাচনের পর বিজেপির সঙ্গে রফা করতে পারে। তাই ছোটখাট শক্তিকে বিশ্বাস করছেনা রাজ্যে মুসলিমরা। তাই বেশিরভাগ মুসলিমরা এবার কংগ্রেসকেই ভোট দেবে।

১৯৫২ সাল থেকে এই রাজ্যে মুসলিম বিধায়কের সংখ্যা

Advertisement

১৯৫২      –       ১ জন          ১৯৮৯   –  ১২ জন

১৯৫৭      –       ৯ জন           ১৯৯৪   –   ৬  জন

১৯৬৭      –       ৬ জন            ১৯৯৯  –   ১২ জন

১৯৭২      –       ১২ জন          ২০০৪  –    ৭ জন

১৯৭৮      –        ১৭ জন          ২০০৮  –    ৯ জন

১৯৮৩      –          ২ জন          ২০১৩  –    ১১ জন

 

 

মনে রাখতে হবে কংগ্রেস পরিচালিত সিদ্দারামাইয়া সরকার গত পাঁচ বছরে তেমন কোনও কাজ করেনি। ব্যাঙ্গালুরুর ইলেক্ট্রন সিটির চারপাশে রাস্তাঘাট খানাখন্দে ভরা। রাস্তা দিয়ে একের পর এক ট্রাক যখন ছুটে চলে, মানুষ রাস্তার পাশ দিয়ে চলতে পারেনা। ইলেকট্রন সিটির আশপাশে হাজার-হাজার আবাসন গড়ে উঠছে। কিন্তু রাজ্য সরকারের পক্ষে কোন পরিকাঠামো তৈরি করে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যে নামতেই গোটা এলাকা অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায়। সরকার এখনও এই শহরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করে দেয়নি। ব্যাঙ্গালুরু থেকে ইলেকট্রন সিটিতে আসতে যে সেতুটি পড়ে, সে সেতু পারাপার হতে প্রত্যেক গাড়িকে ১৩৫ টাকা করে কর দিতে হয়। কংগ্রেস সরকার স্রেফ জাতপাতের সুবিধাকে হাতিয়ার করে এবং মুসলিমদের বিজেপি বিরোধিতার সুযোগ নিয়ে ক্ষমতায় ফিরতে সচেষ্ট। নয়তো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার যেমন উন্নয়ন করেছে, তার সিকি ভাগও এখানে হয়নি। কিন্তু দেশজুড়ে মোদি সরকারের ব্যর্থতা রাজ্যের মুসলিমদের বিজেপি ভীতি ফের এই রাজ্যে কংগ্রেসকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে পারে।

 


শেয়ার করুন
  • 47
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

three × one =