কলকাতা 

‘‘কিছু রাজনৈতিক দল বলল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু নন, তাঁকে পুজো দিতে দেওয়া যাবে না। আমি বললাম, তুমি কে হরিদাস, তুমি ঠিক করে দেবে, আমি কী? এটা ভারতের ধর্ম নয় “ নাম না করে বিজেপিকে তোপ মমতার

শেয়ার করুন
  • 1
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

বাংলার জনরব ডেস্ক : দেশে চলা ক্রম-বর্ধমান বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে সোমবার আলমবাজারে মহামিলন মঠে দাশরথিদেব যোগেশ্বরের ১৩৮তম ও সঙ্ঘ সভাপতি কিঙ্কর বিঠ্ঠল রামানুজ মহারাজের ৭৩তম জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে সরব হন। সেই অনুষ্ঠানে মমতা বলেন, যাঁরা ধর্মের নামে বিদ্বেষ করে, একে অপরের গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়, একে অপরের ছোঁয়া খেলে ধর্ম চলে যাবে বলে এবং ধর্মের নামে বজ্জাতি করে, তাঁদের তিনি ধর্মীয় মানুষ মনে করেন না। তিনি বলেন, ‘‘ধর্মের কোনও সীমারেখা নেই। কেউ কেউ ধর্মের নামে বিদ্বেষ ছড়ায়। ধর্মের থিয়োরি ঠিক করে দেয়।’’

মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভে সঙ্গে বলেন, ‘‘বিদ্বেষ এমন একটা জায়গায় নিয়ে গিয়েছে, কেউ কিছু বললেই বলা হচ্ছে, তুমি পাকিস্তানি, আমি সাচ্চাস্তানি। এত দিন বাদে আমায় পরিচয় দিয়ে বলতে হবে, দেশকে ভালবাসি! এত দিন কাজ করার পরেও বলত হবে, আমার ধর্ম, পদবি কী! এ-সব শুনে লজ্জিত মনে হয়। পরিচয় মানুষ হিসেবে কেন নয়। মাঝেমধ্যে মনে হয়, এ রাজনীতি করার প্রয়োজন ছিল না।’’

Advertisement

পুরীর মন্দিরে পুজো দিতে গিয়ে তিনি যে-বাধার মুখে পড়েছিলেন, সেই প্রসঙ্গ টেনেও এ দিন ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কিছু রাজনৈতিক দল বলল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু নন, তাঁকে পুজো দিতে দেওয়া যাবে না। আমি বললাম, তুমি কে হরিদাস, তুমি ঠিক করে দেবে, আমি কী? এটা ভারতের ধর্ম
নয়। এটা বিদ্বেষ, ঘৃণা।’’ বিদ্বেষ দিয়ে যে কাউকে ভালবাসা যায় না, সে-কথাও ঘুরেফিরে এসেছে মমতার বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘‘মহারাজের কথা শুনে আমি ভাবছিলাম, সবাইকে নিয়ে চলার মানসিকতা, একতা রাখতে পারব তো! দেশটা টুকরো হয়ে যাবে না তো!’’

মমতা জানান, সাধারণ মানুষ যেন তাঁকে নিজেদের ঘরের, পরিবারের এক জন বলে ভাবেন। ‘‘আমাকে কোনও চেয়ারের জন্য ডাকবেন না। আমি এ মাটির মেয়ে হিসেবে ঘরের মেয়ের মতোই থাকতে চাই’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে তাঁকে সারাজীবন অনেক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে। মার খেতে হয়েছে। বিশ্বাস হারাতে বারণ করেন মুখ্যমন্ত্রী।

সরাসরি নাম না-করে বিরোধীদের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কে অপপ্রচার করল, কুৎসা রটাল, তাতে আমার কিছু যায়-আসে না। ছোটবেলায় দুঃখ পেতাম। এখন এ-সবের ঊর্ধ্বে উঠে গিয়েছি। কেউ কিছু বললে মনে মনে বলি, ঈশ্বর ওঁকে ক্ষমা করো। ওরা নিজেরা জানে না, কী বলছে কী করছে।’’

শেষে মুখ্যমন্ত্রীর মুখে দুঃখ এবং অভিমানে বলে ওঠেন , মাঝে মাঝে মনে হয় , ‘‘এ দেশে আমি জন্মাইনি। এ দেশকে আমি চিনি না।’’

এ দিনের অনুষ্ঠানে দমদম লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী সৌগত রায়, বিধায়ক তাপস রায়, মদন মিত্র এবং অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

 


শেয়ার করুন
  • 1
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  
  •  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

Leave a Comment

eleven − five =